আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এক দফার নামে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বিএনপি। তিনি বলেন, আর শান্তি সমাবেশ নয়, এবার প্রতিরোধ। আজ থেকে প্রতিরোধ সমাবেশ চলবে। -আমাদেরও এক দফা তাদের ষড়যন্ত্রের দুর্গ চূর্ণবিচূর্ণ করে দেবো।
রোববার (২১ মে) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে তিনি একথা বলেন। বিএনপি-জামায়াতের মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এ শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৯ তারিখে রাজশাহীর পুঠিয়ায় বিএনপির জেলা আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাদ বলেছেন, আর ২৭ দফা নয়, ১০ দফা নয়, এক দফা শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে। ফখরুলের মনেও সেই কথা। এই রাজশাহীতে বিএনপির সাবেক মেয়র ‘৭৫ এর ১৫ আগস্টের হাতিয়ার গর্জে ওঠার কথা বলেছিলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা আজ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করার জন্য লন্ডনের নির্দেশে ফরমায়েশে দলে দলে তারা লন্ডন যাচ্ছেন। শেখ হাসিনাকে হত্যা করাই এদের এক দফা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদেরও এক দফা-অপশক্তির আস্তানা গুঁড়িয়ে দিতে হবে। খুনি জিয়ার উত্তরসূরি, ১৫ আগস্ট, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, জঙ্গিবাদের ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। বাংলাদেশে হত্যার রাজনীতি তারা শুরু করেছেন। তারা ক্ষমতায় গেলে লাশের পাহাড় গড়ে তুলবে। এ চক্রান্তের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে রক্ষা করতে হবে। এ ষড়যন্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সব পক্ষের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, শেখ হাসিনার উন্নয়ন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ শেখ হাসিনার উদ্যােগের বিরুদ্ধে।
‘আজকে এ অপশক্তি আবারও বাংলাদেশকে দুর্নীতির পাহাড় বানাতে চায়। আত্মসাৎ, অর্থপাচার করে বাংলাদেশকে লুটপাট করার হাওয়া ভবন করার চক্রান্ত করছে। তারেক রহমান বাইরে বসে বসে ফন্দি আঁটছেন, চক্রান্ত করছেন। নির্বাচন করবেন না সেটা আমরা জানি। কিন্তু নির্বাচন ঠেকাতে আসলে বাংলার জনগণকে নিয়ে আমরা প্রতিহত করব। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে বাধা দিতে দেবো না।’
তিনি বলেন, উন্নয়ন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ করতে হলে শেখ হাসিনাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। ফখরুল সাহেব, চাপাবাজি অনেক করেছেন। শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি। আমার কাছে ভিডিও আছে। তারা জানে, তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে। কবরে শুয়ে আছে। মৃত তত্ত্বাবধায়ককে জীবিত করতে চায়। শেখ হাসিনার পদত্যাগ চায় কারণ শেখ হাসিনার সঙ্গে নির্বাচনে কোনোদিন তারা জিততে পারবেন না। এখন তাদের ভয় শেখ হাসিনা। সেরা আতঙ্ক শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা থাকলে তাদের ক্ষমতায় ফেরার সুযোগ নেই। সেজন্য তারা শেখ হাসিনার অস্তিত্ব নির্মূল করতে চায়। আমাদেরও এক দফা, এক দাবি- বিএনপির সাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদী, দুর্বৃত্তপরায়ণ রাজনীতি কবরস্থানে পাঠাবো।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে সারা বাংলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করতে হবে। সংবিধানের বাইরে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনার পদত্যাগ মামাবাড়ির আবদার।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শক্তি প্রথমবার হওয়া তরুণ ভোটার ও নারী সমাজ। এসময় দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান কাদের।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচিসহ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা।
বক্তারা বলেন, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করলে বিএনপি-জামায়াতকে কঠোর জবাব দেওয়া হবে। একইসঙ্গে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে আগামী নির্বাচনেও শেখ হাসিনা সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।