নগর সংবাদ।।সাভারের আশুলিয়ায় পরকীয়া প্রেমিককে নিয়ে স্বামীকে হত্যার ঘটনায় স্ত্রীসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে তাদের আদালতে পাঠালে নিহতের স্ত্রী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বাকিদের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক।
গ্রেফতাররা হলেন- নিহত প্রতীক হাসানের (৩০) স্ত্রী লিজা আক্তার (১৮), তার মা লাকী বেগম, দাদি ফুলজান ও চাচাতো বোন জামাই সুজন মিয়া ও পরকীয়া প্রেমিক সেলিম।
নিহত প্রতীক হাসান ঘাটাইলের লক্ষ্মীন্দর ইউনিয়নের বিল্লাল হোসেনের ছেলে। তার মা হাসনা বেগম ইউনিয়নের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, এক বছর আগে একই উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ঘোনার দেউলি গ্রামের লেবু মিয়ার মেয়ে লিজা আক্তারের সঙ্গে প্রতীক হাসানের বিয়ে হয়। বিয়ের পরই ঢাকার আশুলিয়া গিয়ে প্রতীক একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। লিজা ওখানেই গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। এক পর্যায়ে একই বাসায় সিরাজগঞ্জের সেলিম নামে এক ভাড়াটিয়া যুবকের সঙ্গে তার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
শনিবার এ বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই সময় লিজা ও পরকীয়া যুবক মিলে প্রতীক হাসানকে মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যা করে। সোমবার মরদেহ শ্বশুরবাড়ি নিয়ে গিয়ে স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে তার শাশুড়িকে জানান। বিষয়টি সন্দেহ হলে তাদের আটক করে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিলে লিজা আক্তার পরকীয়া প্রেমিককে নিয়ে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় ওইদিন নিহত প্রতীকের বাবা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।
প্রতীকের বাবা বিল্লাল বলেন, আমার ছেলে আশুলিয়ায় গার্মেন্টসে চাকরি নেয়। এরই মধ্যে সেলিম নামে এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে লিজা। শনিবার প্রতীক হাসান গ্রামের বাড়ি আসে। লিজাও ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়ায় তার এক আত্মীয়ের বাড়ি আসে। লিজা ফোনে যোগাযোগ করে প্রতীক হাসানকে আবার গাজীপুর নিয়ে যায়। রোববার রাতে লিজার বাবা ফোন করে জানায়, প্রতীক স্ট্রোক করে মারা গেছে। আমরা মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি আসছি। সোমবার সকাল ৯টার দিকে প্রতীকের মরদেহের সঙ্গে তার স্ত্রী এবং শাশুড়ি বাড়িতে আসে।
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জিয়াউল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বাবা বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ আসামিকে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। নিহতের শ্বশুরকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
ঢাকা জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, লিজা স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বাকিদের দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।