চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।। রমজানে ভারত থেকে পেঁয়াজ-চিনি আনতে পারবো পবিত্র রমজান মাসে ভারত থেকে স্থলপথে পেঁয়াজ-চিনি আমদানি করা যাবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা জানান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। রমজানে পেঁয়াজ এবং চিনি স্থলপথে আমরা ভারত থেকে আনতে পারবো। ভারত থেকে পণ্য আনতে সুবিধা। ছোট ব্যবসায়ীরা সুবিধা পান। এতে করে বড় জাহাজে ৫০ হাজার ৬০ হাজার টন একত্রে আনতে হয় না। রমজান মাসে ব্যবসায়ীদের বিবেকবান হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু রমজান নয়, পুরো বছর আমরা বাজার স্থিতিশীল রাখতে চাই। স্বাধীন দেশে আমরা বসবাস করি। ব্যবসায়ীরা তাদের কাজের জায়গা থেকে দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করলেই কোনো সমস্যা হয় না। এসময় প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে বর্তমানে ১৮ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের যেসব দাবি উঠেছে, প্রত্যেকটি কাজ আমরা পর্যায়ক্রমে করবো। আমাদের মন্ত্রণালয়ের কোনো কাজ পেন্ডিং থাকবে না। আমরা সব জায়গায় জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবো।
কৃষি বিপণন আইন আছে, দীর্ঘদিন ধরে এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এসেনসিয়াল কমোডিটির একটি আইন আছে, খাদ্য নিয়ন্ত্রণের একটি আইন আছে। এই আইনগুলো নিয়ে আমরা আগামী ২০ দিনের মধ্যে কাজ শুরু করবো। ১ মার্চ থেকে নতুন বাজার ব্যবস্থাপনার নির্দেশনা দেওয়া হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, কৃষি পণ্যের যৌক্তিক মূল্য না থাকলে কেউ বাঁচবে না। পেঁয়াজ নিয়ে আমরা এখন সামান্য কষ্টে আছি। কিন্তু আমরা এগুলো মাঠপর্যায়ে মনিটরিংয়ের আওতায় নিয়ে আসছি। সারাদেশে ২০-২৫টি জেলার হাটে আমরা পেঁয়াজের বাজার মনিটরিং করছি। আজকে যে পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি হলে আগামী বছর তা থাকবে না। কারণ উৎপাদন বাড়বে নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে মন্ত্রণালয় কাজ করছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আনার জন্য এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি উপজেলা ঘিরে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ‘একটি গ্রাম একটি পণ্য’ এই ব্যানারে প্রতিটি গ্রাম থেকে তৃণমূল মানুষের উৎপাদিত প্রতিটি পণ্য নিয়ে উপজেলা, জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে মেলা আয়োজন করবো, কারিগরি সহযোগিতা দেবো। এসব পণ্য যদি আন্তর্জাতিক পণ্য হয়, তাহলে একজন মানুষ কোটিপতি হতে বেশি সময় লাগবে না। টিসিবির পণ্য দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে এক কোটি পরিবারকে টিসিবির পণ্য দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা। চাল, তেল, ছোলা এবং ডাল দেওয়া হচ্ছে।
সামনে চিনি ও খেজুর যুক্ত হবে। বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি করতে হবে উল্লেখ করে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাজারে বেস্ট প্রাইজটা পাওয়া যায়। আর আমাদের বিষয়টি দেখতে হবে, প্রশাসনের যারা দায়িত্বে আছেন, তারা কেউ যেন ফাউল প্লে না করে। বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা এখন দোকানে দোকানে গিয়ে কোনো তথ্য নেবো না। একেবারে কোন মিল থেকে চাল আসছে, আমরা সেটি ভেরিফাই করবো। ১ তারিখ থেকে প্রতিটি চালের বস্তার ওপর লেখা থাকবে- কি ধান, কোন মিলে কবে ক্রাসিং হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা জনগণের দুর্ভোগ কোনোভাবেই, কোনোপর্যায়ে সহ্য করতে রাজি না। মানুষকে কষ্ট দিয়ে কোনো ব্যবসায়ী ভালো থাকতে পারে না। কেউ সামনের দিকে এগুতে পারে না। আমরা ব্যবসা যাতে সহজ হয়, ব্যবসায়ীরা যাতে সহজে আমদানি রপ্তানি করতে পারে, সেদিকেও নজর দেবো। অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর গাজা পরিস্থিতির কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। দেশে ডলার সংকট রয়েছে। যে কারণে পণ্যের দামে প্রভাব পড়ছে। খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবুল বশর বলেন, অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়ায়। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। রমজানে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ কিংবা কমানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে দুই থেকে তিন মাস আগে থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে রমজানে এক থেকে দুই মাস আগে পণ্যের দাম কমে।