নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমি বেঁচে আছি। কিন্তু বোমাটা আমাকে উদ্দেশ্য করেই ব্লাস্ট করা হয়েছিল।
বুক ভরা ব্যাথা আছে, কষ্ট আছে সেই সাথে আশাও আছে। কারণ জাতির পিতার হত্যার বিচারও অনেক বছর আটকে ছিল। কিন্তু সে বিচার হয়েছে এবং বিচার কার্যকরও হয়েছে। যেহেতু জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের সবকিছু আইন অনুযায়ী চলছে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এ ধরণের অপরাধ যারা করেছে তাদের বিচার হবে। তবে মনের ভেতর একটাই সংশয়, বিচারটা দেখে যেতে পারব তো? কারণ বয়স তো বেড়ে যাচ্ছে।
বুধবার (১৫ জুন) গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে বোমা হামলার ২১ বছরেও বিচার কাজ সম্পন্ন না হওয়ার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে এসব বলেন তিনি। ২০০১ সালের ১৬ জুন এই বোমা হামলায় ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে, বরণ করেছেন আজীবন পঙ্গুত্বও।
তিনি বলেন, দুঃখের ব্যাপার এটাই যে সর্ষের ভেতর ভূত আছে। কারন মোরসালিন মোত্তাকিন দুই ভাই (বোমা হামলার মামলার আসামি) তারা ভারতের জনপ্রিয় পত্রিকা দ্যা হিন্দুস সহ কয়েকটা জনপ্রিয় পত্রিকায় ইন্টারভিউ দিয়েছিল। তারা দিল্লিতে আরডিএক্স (বোমা) সহ ধরা পড়েছিল। আজ থেকে একুশ বছর আগে আরডিএক্স, তার মানে নিশ্চই বিশাল বড় কোন শক্তি তাদের সাথে ছিল।
আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই কারণ স্বজন হারানোর ব্যাথা তার চেয়ে ভাল কেউ বুঝবে না। বোমা হামলার পর আমি একটা কথাই বলেছিলাম শেখ হাসিনাকে বাঁচান। আমার তখন মাত্র জ্ঞান ফিরেছিল, আমি কানে শুনছিলাম না।
আমি যেহেতু ভিকটিম তাই আমাকে খোঁজ খবর রাখতে হয়েছে। এ প্রোগ্রামটার নাম হচ্ছে হিট এন্ড রান। তারা নারায়ণগঞ্জকে বেইজ করে এখানে থাকে। ওরা সময়মত ঢাকাকে হিট করবে। টার্গেট এখনও শেখ হাসিনা। এর প্রমান ওই মোরসালিন মোত্তাকিন হিন্দুস পত্রিকায় বলেছিল শামীম ওসমান আমাদের প্রাইমারি টার্গেট, শেখ হাসিনা আমাদের পার্মানেন্ট টার্গেট। তারা একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মধ্য দিয়ে এটা প্রমান করেছে।
তিনি বলেন, আমার দাবী থাকবে। ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ। আমরা এত আসামি ভারতকে তুলে দিয়েছি। ভারত থেকে মুরসালিন মোত্তাকিনকে এনে যদি জিজ্ঞসাবাদ করা যায় তাহলে কোন কোন বড় দল ও বড় শক্তি এ ঘটনার সাথে জড়িত ছিল তা বেরিয়ে আসবে। ভবিষ্যতের ঘটনা থামানোর জন্য এটা হওয়া উচিত।
২০০১ সালের ১৬ জুন রাতে শহরের চাষাঢ়াস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে অবস্থিত ওই কার্যালয়ে বোমা হামলায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ২০ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছিলেন সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানসহ আরও অনেকেই।