পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ছাত্রলীগকর্মী তাসফির আহম্মেদ মনা হত্যায় জড়িত ১২ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান মিলেছে। উদ্ধার করা হয়েছে কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিজের কার্যালয়ের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী এসব তথ্য জানান।
গ্রেফতাররা হলেন- মো. মানিক (৩৬), ফসিউল আলম অনিক (২৭), চমন (৩৮), শাহিন সরদার (২৮), রাজিব (৩০), আরিফুল ইসলাম (৩২), অবুঝ (৩৭), মনিরুল ইসলাম (৩৪), মাহফুজুর রহমান ওরফে কালা (৩৫), লিখন ওরফে ফারুক আহমেদ (৩৭), সানোয়ার মালিথা (৪০), মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে রকি। এদের মধ্যে আসামি অবুঝের বিরুদ্ধে আদালতে পাঁচটি, মাহফুজুর রহমান কালার বিরুদ্ধে চারটি, মানিকের বিরুদ্ধে ১১টি, চমনের বিরুদ্ধে ১০টি, ফসিউল আলম অনিকের বিরুদ্ধে পাঁচটি, রাজিবের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা বিচারাধীন।
পুলিশ সুপার জানান, ১৭ জুন ঈশ্বরদী উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামে এমপি মার্কেটের সামনে ছাত্রলীগকর্মী মনাকে গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলেই মনা মারা যান। এ ঘটনায় নিহত মনার মা বাদী হয়ে ১৯ জুন মামলা করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রথমে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত অনিককে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যে ঢাকা, গাজীপুর, কুষ্টিয়া ও পাবনার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অন্যতম আসামি মানিকসহ আরও ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ঈশ্বরদী জিগাতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধানসহ তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়। গ্রেফতাররা জানান, কারখানাটিতে অত্যাধুনিক অস্ত্র তৈরি করা হতো যা পরবর্তীতে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠনে ব্যবহার এবং অস্ত্র ব্যবসা করা হতো।
পুলিশ সুপার আরও জানান, আসামিদের সঙ্গে ভিকটিমের পরিবারের দীর্ঘদিনের শত্রুতা, চাঁদাবাজি এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। শনিবার আগে থেকেই মনা সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন মনিরুল এবং আরিফ। রাত সোয়া ১০টার দিকে মোটরসাইকেলে মানিক, অনিক এবং অজ্ঞাত একজন এমপি মার্কেটে এসে ট্রাক-লরি শ্রমিকের ঘরে বসে থাকা অবস্থায় মনাকে গুলি করে পালিয়ে যান। ব্যাক আপ পার্টি হিসেবে পাঁচ-ছয়জন ঘটনাস্থলের আশপাশে অবস্থান নেন। এ সময় কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারী তিনজন মোটরসাইকেল নতুন হাটে যায় এবং সেখানে আগে থেকেই অবস্থানকারী শাহীনের প্রাইভেটকারে উঠে ঈশ্বরদী বাইপাস রোডে আখ ক্ষেতে নিকিম কোম্পানির পোশাক এবং হেলমেট ফেলে দিয়ে জিগাতলার ভাড়া বাসায় ফেরত আসে। গ্রেফতারদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেল হাজতে পাঠানো হচ্ছে।