প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের স্বার্থে সর্বোচ্চ ত্যাগ করতে প্রস্তুত আছি। জীবন থাকতে বাংলাদেশের মানুষের এতটুকু স্বার্থ নষ্ট হতে দেবো না।
তিনি বলেন, এমন একটি দেশে ফিরে এসেছি যেখানে আমার পিতার খুনীদের বিচার হবে না বলে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছিল সে বিচার বন্ধ হয়েছিল। সেই রকম একটা দেশে আমার থাকার জায়গা ছিল না, আমি কিছুই চিন্তা করিনি। ছেলেমেয়ের দায়িত্ব রেহানার হাতে ছেড়ে দিয়ে আমি চলে এসেছিলাম।
শেখ হাসিনা বলেন, একটা কথাই স্মরণ করে, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানের যে স্বপ্ন আমার বাবা দেখেছিলেন- তিনি বলেছিলেন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে না পারলে আমার এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে। কাজেই স্বাধীনতা যেন ব্যর্থ না হয়, এ স্বাধীনতার সুফল যেন বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছায়, তৃণমূলের মানুষ যেন সেই সুযোগ পায় সেটা নিশ্চিত করাই ছিল আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।
৯৬ সালে সরকার গঠনের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশটাকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলাম, বিদ্যুতের উৎপাদন-স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি করেছিলাম, রাস্তাঘাট-যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতুসহ অনেক কাজ করে বাংলাদেশকে আমরা একটা জায়গায় নিয়ে এসেছিলাম। আমাদের দুর্ভাগ্য ২০০১-এ আমরা সরকারে আসতে পারিনি। কেন পারিনি অনেকবার বলেছি, আর বলতে চাই না; বাংলাদেশের এতটুকু স্বার্থ আমার জীবন থাকতে নষ্ট হবে না, কারো হাতে তুলে দেবো না। আমার এ প্রতিজ্ঞাই ছিল। হয়তো সে কারণে আমরা আবার আসতে পারিনি। তাতে আমার কোনো আফসোস নেই। ২০০১-এ যারা ক্ষমতায় এসেছিল হত্যা, খুন, লুটপাট, দুর্নীতি, বিদ্যুতের পরিবর্তে খাম্বা, এ রকম অনেক খেলাই এ দেশের মানুষ দেখেছে।
টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮-এ জয় লাভ করে ২০০৯-এ সরকার গঠন করেছি, আজকে ২০২২। পরপর ৩ বার ক্ষমতায়। আর ক্ষমতায় আছি বলেই আজকে বাংলাদেশকে আমরা উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি। যেখানে বাংলাদেশের বাজেট হতো মাত্র ৬২ হাজার কোটি টাকার। এ ২০২২-২৩ অর্থবছরে আওয়ামী লীগ বাজেট দিয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। করোনাভাইরাস মোকাবিলা করে বিশেষ প্রণোদনা দিয়েও আমরা এ বাজেট দিতে সক্ষম হয়েছি। আমরা সরকার গঠন করার পর থেকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি।
ভোট চুরি করলে বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেয় না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি নির্বাচন হয়েছিল খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু কারো ভোট চুরি করলে বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেয় না। এ দেশের মানুষ মেনে নেয়নি। গণঅভ্যুত্থান, আন্দোলন হয়েছিল। খালেদা জিয়া ৩০ মার্চ পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। বাংলার জনগণ তাকে বাধ্য করেছিল। এর পরে ১২ জুন যে নির্বাচন হয়েছিল, সেই নির্বাচনে আমরা সরকার গঠন করি।
তিনি বলেন, ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তালিকা করে নির্বাচনে কারচুপি করে যে চক্রান্ত করেছিল সে চক্রান্ত এ দেশের জনগণ সম্পূর্ণভাবে নস্যাৎ করে দিয়েছে, তার পরে অবশ্য ইমার্জেন্সি আসে, গ্রেপ্তার করে। ২০০৮-এ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মহাজোট করে আমরা জয় লাভ করি। আমরা সরকার গঠন করার পর থেকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি।