শনিবার ১৭ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ভোর ৫:৫০
শিরোনামঃ
Logo জনগণের নিরাপত্তা ও সেবা প্রদানে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে-ডিএমপি কমিশনার Logo সুবর্ণচরে খাল দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের অভিযান, ২৬টি অবৈধ দোকান উচ্ছেদ Logo ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের মূল সহযাত্রী জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিলের দাবি-সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠনের জোট জুলাই ঐক্যের নেতারা। Logo ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে এক শিক্ষার্থী নিহত Logo যমুনায় ইলেকট্রনিক শর্ট দিয়ে মাছ শিকার করায় চৌহালীতে ৭জেলেকে অর্থদন্ড। Logo নীলফামারী রিপোর্টার্স ক্লাবের সাথে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের শুভেচ্ছা বিনিময় Logo সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম গ্রেফতার Logo নারায়নগন্জ সিদ্ধিরগঞ্জে সিএনএন বাংলা টিভির এমডির গাড়ী থেকে দেশীয় অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার, আটক-১ Logo বন্ধুদল স্পোর্টিং ক্লাবের উদ্যোগে, দ্বাদশ তম বর্ষে পদার্পণ করলো, সপ্তকন্যার শুভ বিবাহ । Logo ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে মামলা ও পরোয়ানাভুক্ত আরও ৯৯৬ জন গ্রেফতার

সফল মা- সেলাই মেশিন চালিয়ে ছেলে বিসিএস ক্যাডার করলেন।

nagarsangbad24
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর, ১১, ২০২১, ১০:২৭ অপরাহ্ণ
  • ৬০০ ০৯ বার দেখা হয়েছে

নগর সংবাদ।। সফল মা- সেলাই মেশিন চালিয়ে ছেলে বিসিএস ক্যাডার করলেন। অভাবের সংসার ছিল তারাপদ সরকারের। মাছের ব্যবসা করতেন তিনি। বিভিন্ন জায়গা থেকে মাছ কিনে বিক্রি করতেন হাটবাজারে। সেই মাছ বিক্রির রোজগারের টাকা দিয়ে চলতো সংসার ও ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া। ২০০৬ সালে হঠাৎ দুর্যোগ নেমে আসে তার পরিবারে। সাতক্ষীরার ত্রিশমাইল এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তারাপদ সরকার। এতে বেসামাল হয়ে পড়ে তার পারিবার। ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হয়ে যায়। বাবা মারা যাওয়ার পর ভারাক্রান্ত মন নিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন ছেলে লালটু সরকার।

সেলাই মেশিন চালিয়ে ছেলেকে লেখাপড়ার খরচ দিয়েছেন মা। পাশাপাশি টিউশনি করেছেন লালটু। সেদিনের লালটু সরকার ৩৮তম বিসিএসের শিক্ষা ক্যাডারে সারা দেশের মধ্যে তৃতীয় হয়েছেন। লালটু সাতক্ষীরার তালা সদরের মাঝিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা। ভাই-বোনের মধ্যে লালটু ছোট। বড় বোন দিপালী সরকার থাকেন স্বামীর বাড়িতে। মা সুলতা সরকার থাকেন গ্রামের বাবার রেখে যাওয়া কুঁড়েঘরে। মঙ্গলবার (৩০ জুন) ৩৮তম বিসিএসের ফল প্রকাশ হয়েছে। ফলাফলে লালটু সরকার সারা দেশের মধ্যে শিক্ষা ক্যাডারে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন। বুধবার (১ জুলাই) সন্ধ্যায় আলাপ হয় লালটু ও তার মা দিপালী সরকারের সঙ্গে। এ সময় অসহায় হয়ে পড়া দিনগুলোর কথা বলে আবেগাপ্লুত হন মা-ছেলে।

দিপালী বলেন, ২০০৬ সালে লালটুর বাবার মারা যাওয়ার পর খুব অসহায় হয়ে পড়েছিলাম। দিন চলতো না ঠিকমতো। খেয়ে না খেয়ে থেকেছি। এরপর একটি বেসরকারি সংস্থা একটা সেলাই মেশিন দেয়। সেই সেলাই মেশিনের হাতের কাজ করে উপার্জনের টাকা দিয়ে সংসার চলতো। ছেলে লেখাপড়া শিখতো। খুব বেশি খরচ ছেলেকে কোনোদিন দিতে পারিনি। তবে চেষ্টা করেছি সাধ্যমতো। ছেলে বিসিএস ক্যাডার হয়েছে। তবে এটি কি জিনিস আমি বুঝি না। তবে ছেলে বলেছে ভালো চাকরি পেয়েছে। আমাদের আর অভাব থাকবে না। খুব খুশি হয়েছি। ছেলের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই। লালটু ২০০৭ সালে তালা বিদে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৪ পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

এরপর ২০০৯ সালে তালা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মহাবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৪.৬০ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে দর্শন বিভাগে ভর্তি হন। সেখান থেকে ২০১৩ সালে অনার্স ও ২০১৪ সালে মাস্টার্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।  অসহায়ত্বের দিনগুলোর কথা তুলে ধরে লালটু বলেন, এসএসসি পরীক্ষার এক বছর আগে বাবা মারা যান। বাবা মারা যাওয়ার পর দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। কি করব বুঝতে পারছিলাম না। তবে লেখাপড়া চালিয়ে গেছি। অভাবের মধ্যেই বেড়ে উঠেছি। এইচএসসি শেষ করে তালা থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর টাকার অভাবে চারটি টিউশনি করেছি। সেই টাকায় শেষ করেছি লেখাপড়া। মা-বোন সাধ্যমতো সহযোগিতা করেছে আমাকে।

মা-ই আমার একমাত্র সম্বল। লালটু বলেন, মাস্টার্স শেষ করার পর বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা দিয়েছি। বার বার ব্যর্থ হয়েছি। তবে আমি স্বপ্ন দেখতাম বিসিএস ক্যাডার হব। ২০১৭ সালে ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলো। পরীক্ষা দিয়েই বুঝেছিলাম আমার নাম আসবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলাম। এরপর দৈনিক ১৮-১৯ ঘণ্টা পড়ালেখা করতাম। অবশেষে শিক্ষা ক্যাডারে সারা দেশে তৃতীয় হয়েছি। আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বিসিএস উত্তীর্ণ হওয়ার পর অনুভূতি জানিয়ে লালটু বলেন, পরিশ্রম করলে সব সম্ভব। আমি চেষ্টা করেই আজ সফল হয়েছি। স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় আমি খুব খুশি।

এখন সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমার ওপর আসা রাষ্ট্রের সরকারি দায়িত্ব পালন করতে চাই। সেজন্য সবার কাছে দোয়া চাই। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার আগে বাংলাদেশ ক্যামিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি। এছাড়া বর্তমানে ফরিদপুরের সদরপুর মহিলা কলেজের প্রশাসন হিসেবে দায়িত্বে রয়েছি। স্থানীয় বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য শেখ সিদ্দিক হোসেন বলেন, পরিবারটি খুব অসহায়। মা খুব কষ্ট করে ছেলেটিকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। লালটু নিজেও অনেক কষ্ট ও পরিশ্রম করে আজ বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন। এলাকার সুনাম বয়ে এনেছেন। তার এমন ফলাফলে এলাকার মানুষ আনন্দিত।

এ বিভাগের আরও খবর...

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১  

Archive Calendar

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১  
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | নগর সংবাদ
Design & Developed BY:
ThemesCell