হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘তবে দেশের নাগরিক হিসেবে হেফাজতের নেতাকর্মীদের গণতান্ত্রিক অধিকারে সরকারের দমন-পীড়নের সমালোচনা করে বিএনপি।
মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানে রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ।
সারা দেশে বিএনপির কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হেফাজতের এই কর্মসূচিগুলোর সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। সরকার যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তার প্রতিবাদ আমরা করেছি। সভা-সমাবেশ করা বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকার।’
সরকার সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মদত দিচ্ছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘সরকার একটা প্রচারণা চালাচ্ছে যে, আমরা হেফাজতকে সমর্থন দিয়েছি। আমরা মৌলবাদকে সমর্থন দিয়েছি। আমরা সাম্প্রদায়িক একটা সমস্যা তৈরি করার চেষ্টা করছি। পেছন দিক থেকে নাকি আমরা মদদ দিচ্ছি, উস্কানি দিচ্ছি।’
‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপি নয়, উস্কানি তো দিয়েছে সরকার। প্রথম থেকে উস্কানি দিয়ে আজকে এই অবস্থার সৃষ্টি করেছে তারা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন যে, প্রথম যে মিছিল হেফাজতের ছিল বায়তুল মোকাররমে। তারা একটা সাধারণভাবে প্রতিবাদ মিছিল করতে চেয়েছিল। সেই প্রতিবাদ মিছিলের ওপরে উত্তর দিক থেকে পুলিশ আক্রমণ করেছে। দক্ষিণের গেইট দিয়ে যখন পালাতে গেছে তখন আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করেছে এবং সেখানে বহু লোককে হতাহত করেছে। ঠিক একই ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে। তারা সেখানে মিছিল করতে গেলে সেখান গুলি করেছে, সেই গুলিতে মারা গেছে।‘
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা কলঙ্কজনক অধ্যায় সংগঠিত হয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর যখন সমগ্র জাতি পালন করছে তখন পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনীর গুলি ও আক্রমণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরেছে।’
হেফাজত কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল, ‘সরকার যেহেতু এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সেই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ আমরা করছি। আমাদের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে যে, যেকোনো দল বা সংগঠন তাদের মতপ্রকাশের জন্য সমাবেশ করতে পারে, মিছিল করতে পারে। এইখানে যে আঘাতটা এসেছে আমরা তার প্রতিবাদ করছি-এটা আমাদের বুঝতে হবে।’
সারাদেশে বিএনপির কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘এই সরকার তাদের ফ্যাসিবাদী শাসন দীর্ঘায়িত করতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ এবং হত্যা, মামলাসহ দমন-নিপীড়ন চালিয়ে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।