মাদ্রাসা ছাত্রদের অপহরন করে এক্সিডেন্টের কথা বলে তাদের মা-বাবার কাছ থেকে মুক্তিপন আদায় করতো আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩৩) নামে এক অপহরণকারী। অপহরনকারী আরিফকে তার শশুরবাড়ী নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার পূর্ব শিমুলবাড়ী মিরগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে সদর থানা পুলিশ। সোমবার (২৪ জুন) দুপুরে পুলিশ সুপারের কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার গোলাম সবুর পিপিএম।
গ্রেপ্তারকৃত আরিফ বগুড়া জেলার আদমদীঘী উপজেলার কুন্দগ্রাম এলাকার মৃত মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। এসময় পুলিশ সুপার জানান, ‘সিরাজ-উদ-দৌলা শুভ বসুনিয়া নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রের অপরহরনের খবর পাওয়ার মাধ্যমে আমরা এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারি। শুভর বাবা-মায়ের কাছে অপহরনকারী মুক্তিপন বাবদ আরিফ ১২ হাজার ৮০০টাকা আদায় করে। বিষয়টি পুলিশকে জানালে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তকালে রংপুর রেল স্টেশন এলাকাতেও এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়। সেখানে বিভিন্নভাবে অনুসন্ধান চালিয়ে অপহরণকারীর ছবি আমাদের হাতে আসে।
যে ছবিটি হুবহু আরিফের সাথে মিলে যায়। গতকাল রোববার (২৩ জুন) তার শশুর বাড়ী থেকে আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ও দুটি সিম উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে রংপুরের অপহরনের ঘটনা ও শুভ বসুনিয়াকে অপহরন করার ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিল বলে স্বীকার করে। তার সাথে জড়িত অন্যান্যদের ধরতে আমরা আদালতের কাছে আরিফের রিমান্ড চাইবো।’ এসপি গোলাম সবুর বলেন,‘আরিফ মুলত বগুড়া, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ সহ বিভিন্ন এলাকার মাদ্রাসা ছাত্রদের টার্গেট করতো যাদের নিজস্ব কোনো মোবাইল ফোন নেই।
তাদেরকে অপহরন করে বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ফোন করে তাদের সন্তানকে এক্সিডেন্ট করেছে বলে চিকিৎসার জন্য বিভিন্নভাবে বিকাশ ও নগদে মুক্তিপন আদায় করতো। মুক্তিপন আদায় করে অপহরণকৃত মাদ্রাসা ছাত্রদের ছেড়ে দিয়ে মোবাইল নম্বর বন্ধ করে দিত। তাই আমি বাবা-মায়েদের অনুরোধ করবো এরকম কোনো ফোনকল আপনাদের কাছে আসলে আপনারা সন্তানের সাথে কথা বলতে চাইবেন ও তাৎক্ষনিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) কল্লোল কুমার দত্ত, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তানভীরুল ইসলাম ও নীলফামারী প্রেসক্লাবের সভাপতি মঞ্জুরুল আলম সিয়াম সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।