মানুষের সেবায় প্রতিষ্ঠিত ‘তোফায়েল আহমেদ ফাউন্ডেশনে’ স্থাবর–অস্থাবর সব সম্পদ দানের ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ।রবিবার (২০ জুন) বিকালে ভোলা সদর উপজেলা চত্বরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ ঘোষণা দেন তিনি।অনুষ্ঠানে শারীরিক প্রতিবন্ধী যুবক মো. মিজানুর রহমানের কর্মসংস্থানের জন্য ‘তোফায়েল আহমেদ ফাউন্ডেশনের’ পক্ষ থেকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দেওয়া হয়।প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে তোফায়েল আহমেদ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। তোফায়েল আহমেদ নিজেই এর প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই অসহায় মানুষের সেবায় কাজ করে যাচ্ছে এই ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমি মানুষের কল্যাণে কাজ করি। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জন্য হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম, শিক্ষাবৃত্তিসহ সেবামূলক কাজ পরিচালিত হবে। আমার মায়ের নামে বাংলাবাজারে বৃদ্ধাশ্রম গড়েছি। যেখানে বৃদ্ধ-নারীদের মায়ের মতো সেবা দেওয়া হচ্ছে। শুধু ভোলা নয়, এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সারা দেশের অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য কাজ করা হবে। ভোলায় একটা ফার্ম (খামার) আছে, সেটি বিক্রি করে যে টাকা আসবে তা এখন ফাউন্ডেশনে দেবো। ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেই দরিদ্র মানুষের সেবায় মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণ করা হচ্ছে, পরিচালিত হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রম, শিক্ষাবৃত্তি। তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমার মা-বাবার নামে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে আজাহার ফাতেমা মেডিক্যাল কলেজ। ওই কলেজের দায়িত্বে রয়েছে মেয়ে ডা. তাসলিমা মুন্নী। ওই হাসপাতালও ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। যেখানে বিনা টাকায় চিকিৎসাসেবা পাবে গরিব মানুষ। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণা করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাকে স্নেহ করতেন। আমাকে তার রাজনৈতিক সচিব করেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্নেহই জীবনের বড় সম্পদ। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তিনি বিশ্বে প্রশংসিত।’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভোলার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মমিন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম গোলদার, তোফায়েল আহমেদ ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মইনুল হোসেন ও প্রেসক্লাব সভাপতি এম হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ইজিবাইক পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রতিবন্ধী মো. মিজানুর রহমান, তার মা বিবি ফাতেমা ও স্ত্রী রিনা বেগম। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিজানের বাড়ি বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসাননগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। গত মাসে এলাকার এক রোগী নিয়ে জেলা শহরের যুগিরঘোলের অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিকে আসেন মিজান। পাশের ঈদগাহ মসজিদে নামাজ আদায় করতে গেলে চুরি হয়ে যায় তার ইজিবাইকটি। মা, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সংকটে পড়ে যান। ফেসবুকে এমন একটি বেদনাদায়ক ঘটনা নজরে আসে তোফায়েল আহমেদের। নজরে আসে। কর্মহীন ওই প্রতিবন্ধীর সহায়তায় নতুন ইজিবাইক উপহার দেন তিনি। আরো সংবাদ রাষ্ট্রপতি মুহাম্মাদ আবদুল হামিদ মানসম্মত প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহবান জানিয়েবলেছেন, দেশের প্রতিটি প্রান্তে অধিক সন্তানের জন্মরোধে সেবা পৌঁছে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। শনিবার (১০ জুলাই) ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০২১’ উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রজননস্বাস্থ্য প্রত্যেক নর-নারীর অধিকার। নিরাপদ মাতৃত্ব ও প্রসূতি সেবা, মা ও শিশুস্বাস্থ্য পরিচর্যা, নারীদের সন্তান গ্রহণের সিদ্ধান্তসহ নারীর যথাযথ মর্যাদা ও সম্মানের সাথে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তাপ্রদান করে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা। পরিকল্পিত পরিবার একটি দেশের উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত। পরিবারের আকার ছোট হলে তা পরিবারের সদস্যদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার পূরণের পাশাপাশি সুখী ও সমৃদ্ধশালী দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জনসংখ্যা বিস্ফোরণের আশংকা রয়েছে। তাই এ সময় দেশেপ্রজননস্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট কর্মসূচি আরও জোরদার করতে হবে এবং চলমান কর্মসূচিগুলোতে উদ্ভাবনীমূলক কর্মকান্ডের সন্নিবেশ ঘটাতে হবে। এ লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আরও সক্রিয় ও আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দারিদ্র্যের সাথে জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটা সম্পর্ক রয়েছে। তাই দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সীমিত রেখে দারিদ্র্য বিমোচনসহ শিক্ষার হার ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে দেশের বিশাল কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে পরিণত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, মহামারির এ সময়ে অধিক সন্তানের জন্মরোধ ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তে সক্ষম দম্পতিদের নিকট পরিবার পরিকল্পনা সেবা সঠিক সময়ে পৌঁছে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। দেশে বিদ্যমান সেবা অবকাঠামোসমূহের সর্বোত্তম ব্যবহার এবং মানসম্মত প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে রাষ্ট্রপতি প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেন।