বন্দরে আওয়ামীলীগ নেতা নিলয় আহমেদ বাবু (৩২) হত্যাকান্ডের ঘটনায় নাসিক ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপির সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালামের পুত্র বিএনপি নেতা আবু কাউসার আশাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। নিহত বাবুর মা লিলি বেগম বুধবার রাতে হত্যা, হুকুম ও গুমসহ বিভিন্ন ধারায় এ মামলাটি রুজু করা হয়।
আসামীরা হলেন, ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা (৩৮), নবীগঞ্জ বাগবাড়ি এলাকার আমিনুল (৫৫), হাসিনা বেগম (৪৫), শিপলু (৩২), আফজাল (২২), জিপু (২৬),শহিদুল ইসলাম শইক্কা (৫০), সিরাজুল ইসলাম (৪৫), হাসান (২৬), সোবহান(৩৫)।
মামলা সুত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত হাসিনা বেগমের সঙ্গে পূর্বশত্রুতার জেরে নিহত বাবুর বিরোধ চলছিলো। এতে করে হাসিনা বেগম কিছুদিন পূর্বে বাবু’র বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করে।
যার তদন্তভার নেয় বন্দর ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) রওশন ফেরদৌস। পরে এ ঘটনার মিমাংসার জন্য নাসিক’র ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা দায়িত্ব নেন।
আশার সালিশি বৈঠকে নিহত বাবুকে কাউন্সিলর অফিসে ডাকা হলেও তিনি সেখানে উপস্থিত হননি। পরবর্তীতে কাউন্সিলর আশার হুকুমে গত ৩০ এপ্রিল রাতে সাড়ে দশটায় মামলার অভিযুক্তরা বাবুকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিতে চায়।
এতে করে বাবু দৌড়ে পালাতে চাইলে বাগবাড়ি এলাকার একটি পরিত্যক্ত ডোবায় পড়ে যায়। পরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে আসামীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে চলে যায়। এবং পরবর্তীতে লাশ ঘুম করতে মিথ্যা প্রচারণা চালায়।
নিহত বাবুর পরিবারের ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, হাসিনা বেগমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত রোববার রাত ৯টার দিকে বাবুকে ধরতে তার বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়।
পরে তাকে না পেয়ে পুলিশকে পুজি করে কাউন্সিলর আবুল কায়সার আশার লোকজন বাবুকে ধাওয়া দিলে বাবু নিজেকে বাচাতে বাড়ির পাশের পুকুরে ঝাঁপ দেয় ।
এরপর থেকে নিখোঁজ বাবু। নিখোঁজ বাবুর মা লিলি বেগম গত ২ রা মে থানায় নিখোঁজ জিডি এন্টি করেন। ৪দিন পর বুধবার বিকালে ডোবায় তার মরদেহ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়।
এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করেন। এবং অভিযোগকারি হাসিনা সহ দুইজনকে আটক করে নিয়ে যান। নিহত বাবুর মা লিলি বেগম জানান, আমার বাবুকে কাউন্সিলর আশা মেরে ফেলল। আওয়ামীলীগ সরকারের দল করে বিএনপির লোকজনের হাতে খুন হল আমার ছেলে।
ওরা আমার ছেলেকে নৃশংসভাবে ইট নিক্ষেপ করে মেরেছে। আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই। বিএনপির কাউন্সিলর আশা ও হাসিনাগংদের ফাঁসি চাই।
মহানগর আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির মৃধা বলেন, বাবুকে হারিয়ে আওয়ামীলীগ একজন একনিষ্ট কর্মীকে হারিয়েছে।সে আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলো। দলীয় কার্যক্রম মিটিং মিছিলে তার নেতৃত্বে কর্মীদের উপস্থিতি ছিলো সরব। আমরা এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশের উপ-পরিদর্শক রওশন ফেরদৌসকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় মামলা নেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত নারী সহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।