২১ বছর আগে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে আওয়ামী লীগের চার কর্মীকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ২৩ জনের মধ্যে দুই জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। সাতজনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনজন মারা যাওয়ায় তাদের আপিল বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১১ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৬ মে) বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী জমির উদ্দিন সরকার, এম এম শাহজাহান, ফজলুল হক খান ফরিদ, মোহাম্মদ আবুল হাসনাত, শেখ মো. শামসুজ্জামান ও ইসরাত জাহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী ফজলুল হক খান ফরিদ।
আসামিদের মধ্যে মারা যাওয়া তিনজন হলেন- আবুল বাশার ওরফে কাশু চেয়ারম্যান, ইউনুস আলী মেম্বার ও ইদ্রিস আলী।
যে দুইজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে তারা হলেন- জহিরুল হক ভূইয়া ওরফে জহির মেম্বার ও আব্দুল আহাদ। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মো. ফারুক, মো. খোকন, মো. ডালিম, মো. রোহেল, লিয়াকত আলী, আল আমিন ও রুহুল আমিন। খালাস পাওয়া ১১ আসামি হলেন- সিরাজ উদ্দিন ওরফে সিরাজ, সাহাব উদ্দিন, মো. হালিম, ইয়াকুব আলী, মো. আমির হোসেন, মো. আবুল কালাম, মো. রফিক মিয়া, গোলাম আজম, আব্দুল হাই, হারুন ও তাজুদ্দিন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০২ সালের ১২ মার্চ সকালে আড়াইহাজার উপজেলার জালাকান্দি এলাকার বাড়ি থেকে আড়াইহাজার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই আ. বারেক, তার ফুফাতো ভাই বাদল, আওয়ামী লীগ কর্মী ফারুক এবং কবির হোসেনকে তৎকালীন আড়াইহাজার থানা বিএনপির সহসভাপতি আবুল বাশারের নেতৃত্বে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত বারেকের বাবা আজগর আলী বাদী হয়ে আবুল বাশারকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ২৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এর মধ্যে ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর আওয়ামী লীগে যোগ দেন এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবুল বাশার। পরে এ মামলার বিচার শেষে ২০১৭ সালের ১৭ মে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক কামরুন নাহার ২৩ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। এরপর নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। আর আসামিরা আপিল ও জেল আপিল করেন।