রবিবার ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত ৩:৪৪
শিরোনামঃ
বাংলাদেশকে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের দ্রুত অগ্রসর গুরুত্বারোপ-প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। চৌহালী উপজেলা পরিষদ অবকাঠামো বঞ্চিত ১৩ বছর: ভবন নির্মাণে দ্রুত টেন্ডার আহ্বানের দাবি এলাকা বাসির “শারদীয়া রামধনু”, ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের সাহাযার্থে অনন্য সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। রাজধানীতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ঝটিকা মিছিলের প্রস্তুতিকালে ১১ জন গ্রেফতার সনাতন বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা কুমিল্লায় ৮১৮ টি মণ্ডপে পূজা “উপলক্ষে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা-পুলিশ সুপার। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে দুই হাজার ৩১৩টি মামলা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন-(আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভা নীলফামারীতে ট্রাক টার্মিনাল ও নিরাপদ বাইপাস সড়কের দাবিতে মানববন্ধন West Bengal INTTUC Trinamool Congress calls for protest and sit-in against Bengali speakers রাজধানীর আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান দালাল চক্রের ৪ জন আটক -বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড

আধুনিক চীনে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

nagarsangbad24
  • প্রকাশিত: জুলাই, ৫, ২০২৪, ৩:০৩ পূর্বাহ্ণ
  • ১৬৩ ০৯ বার দেখা হয়েছে

 

আধুনিক চীনে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান“জেলে থাকতে ভাবতাম আর মাঝে মাঝে মওলানা ভাসানী সাহেবও বলতেন, ‘যদি সুযোগ পাও একবার চীন দেশে যাও।’ অল্পদিনের মধ্যে তারা কত উন্নতি করেছে। চীন দেশের খবর আমাদের দেশে বেশি আসে না এবং আসতে দেওয়াও হয় না। তবুও যতটুকু পেতাম মনে হতো যদি দেখতে পেতাম কেমন করে তারা দেশকে গড়েছে!”

চীন সফর নিয়ে এভাবেই আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৫২ সালে তার চীন সফরের স্মৃতি নিয়ে লেখা- ‘আমার দেখা নয়া চীন’ বইয়ে দেশটি গড়ে তোলার চিত্র তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু।

নয়াচীন দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে। তবে গড়ে তোলার আগেই দেশটির পিতা সান ইয়াত সেনের মৃত্যু হয়। এদিক দিয়ে পরবর্তীসময়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মিল থাকলেও উন্নয়ন অগ্রগতিতে মিল পাওয়া যায়নি। চীন তাদের কৌশল অনুসরণ করে অর্থনীতিতে বিশ্বে এখন শক্তিধর রাষ্ট্র। বিশেষ করে, তাদের বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে বিশ্বময়। এদিকে, বাংলাদেশ জাতির পিতার নেতৃত্বে স্বাধীন হলেও তার হত্যাকাণ্ডসহ নানা কারণে পিছিয়ে।

৮ জুলাই আধুনিক চীনে দ্বিপক্ষীয় সফরে যাচ্ছেন বদলে যাওয়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পর চীনে তার প্রথম সফরটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। জাতির পিতার পর সম্পর্কোন্নয়নে গত এক দশকে দুবার সফরের পাশাপাশি মোট চারবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।

এর মধ্যে ২০১৪ সালে বেইজিংয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় সফর, ২০১৬ সালে শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফর, ২০১৯ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আবার বেইজিং সফর এবং ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। এবার তৃতীয়বারের মতো চারদিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে বেইজিং যাচ্ছেন শেখ হাসিনা।

জানা যায়, বাংলাদেশ চীনে রপ্তানি করে ১ বিলিয়ন ডলার, আমদানি করে ১৩ বিলিয়ন ডলার। এই বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে সফরে উদ্যোগ নেওয়া হবে। এরই মধ্যে ১০টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আলোচনা হবে, ৭০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ঋণ নিয়ে। এতে প্রাধান্য পাবে বাণিজ্য সহায়তা ও বাজেট সহায়তার আওতায় ঋণ, বিনিয়োগ সুরক্ষা, ডিজিটাল অর্থনীতি, ব্লু ইকোনমি, মুক্তবাণিজ্য চুক্তির সমীক্ষার ঘোষণা ও একাধিক সেতু নির্মাণ ও সংস্কার। বিশেষ করে তিস্তা প্রকল্পে দেশটি কীভাবে কাজ করতে চায়, এ নিয়েও আলোচনা হবে

আশা করা হচ্ছে, দেশটির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। চারদিনের সফরের দ্বিতীয় দিন ৯ জুলাই দুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও লি ছিয়াংয়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে। পরদিন ১০ জুলাই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক। একই দিন চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস অব চায়নার প্রেসিডেন্ট ঝাও লেজির সঙ্গে সাক্ষাৎ। এছাড়া চীনের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠকের আয়োজন থাকছে।

আসন্ন সফর নিয়ে চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহবুব জামান বলেন, ‘চলতি মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর বেইজিংয়ে এটিই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর, এই বিবেচনায় সফরটি তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধুত্ব, সহযোগিতা রয়েছে। বৈঠকে আমাদের সম্প্রসারিত বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুটি আলোচনার সময় বিশেষভাবে ফুটে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি, যার মধ্যে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, বাণিজ্য বিভাজন, দীর্ঘ সময়ের জন্য সুদের হার এবং জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপর্যয়ের বিবেচনায়ও সফরটি গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘রপ্তানি আয় হ্রাস এবং রাজস্ব হ্রাসের কারণে অভ্যন্তরীণ আয় ও সঞ্চয়ের হারও একটি দুষ্টচক্রের মধ্যে পড়ে আছে, তাই বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রয়োজন। চীন বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ বিনিয়োগকারী। চীন বাংলাদেশে প্রায় ৭ দশমিক ০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যার বেশিরভাগই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। অগ্রাধিকার খাতে সহজ শর্তে চীনা সাহায্য ও সহায়তা স্বাগত জানাবে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কঠিন সময়ে, বাজেটে অতিরিক্ত সহায়তা হিসেবে চীন সহায়তা করতে পারে।’

সাবেক এ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফরের সময়, দুই দেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারত্বে উন্নীত করতে সম্মত হয়েছিল। আসন্ন সফরে আশা করা হচ্ছে যে, যৌথ বিবৃতিতে এই রূপকল্প আরও সুসংহত করার জন্য যৌথ সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হতে পারে।’

‘চীন ও বাংলাদেশ ২০২৫ সালে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদযাপন করবে। সফরে বিষয়টি উঠে আসবে। বিশেষ করে অবকাঠামো খাতে চীনা ঋণের মাধ্যমে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পে অর্থায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানা যায়।’ যোগ করেন চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক এ রাষ্ট্রদূত।

প্রধানমন্ত্রীর এ সফর নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার তো চাইবে বড় সম্পর্ক তৈরির। এখন কত বড় সম্পর্ক তৈরি হবে, সেটা দেখার বিষয়। কারণ পদ্মা সেতু, টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ বড় বড় প্রজেক্টে চীন জড়িত। সামনে কী হবে, এটা সরকারই সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারে, তাদের পরিকল্পনায় কী আছে। তবে আমি আশা করি, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র বা অন্যদের আলাদা করে ফেলার মতো এমন কিছু করবে না। স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশও এটা চাইবে না। তবে, বড় মূলধন তো চীনের কাছে।’

‘পশ্চিমা দেশের তো টাকা-পয়সা কমে গেছে। তারা অবকাঠামো খাতে অর্থায়ন বন্ধও করে দিয়েছে অনেক আগে। ঘুরে ফিরে ওই এনার্জি সেক্টরেই দেয়। কিন্তু রাস্তাঘাট, ব্রিজ বানাতে তথা অকাঠামো উন্নয়নে আমাদের অর্থ প্রয়োজন। এজন্য এ সফরে টাকা আনার চেষ্টা নিশ্চয় সরকার করবে। বড় সম্পর্ক তৈরিরও সুযোগ আছে। চীনের দিক থেকেও নিশ্চয় ইচ্ছা থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘সফরে অন্যরা অখুশি হয় এমন কিছু হবে না, আশা করি। তিস্তার ব্যাপারে চুক্তি হলেও ভারতেরও অংশগ্রহণ করার অবস্থা আছে। যদিও আমরা চীন-ভারত সম্পর্ক বৈরী হিসেবে দেখি। মনে রাখতে হবে ভারতের সঙ্গে চীনেরও বড় সম্পর্ক আছে। যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে এখন ভারতের প্রধান বাণিজ্য কিন্তু চীনের সঙ্গে। বিমসটেকে তারা একসঙ্গে কাজ করে। রাশিয়া-ইউক্রেন এমনকি মিয়ানমারের ব্যাপারেও তারা একসঙ্গে আছে। অনেক বিষয়ে ভারত-চীনের মতের মিল আছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের ব্যাপারেও নতুনত্ব আসতে পারে।’

‘শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক ধসের সঙ্গে চীনকে মিলিয়ে যে নেতিবাচক প্রচারণা হয়েছে, তার বড় ভিত্তি নেই। শ্রীলঙ্কার বিষয়টি চীনের সঙ্গে ঋণের কারণেই হয়েছে, তা নয়। এ নিয়ে পশ্চিমাদেরই একটা গবেষণা রয়েছে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েই চীনের সমালোচনা শুরু করেছে। শ্রীলঙ্কা বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের কাছে অধিক পরিমাণে ঋণী। এমনকি বেসরকারি উৎস থেকে যে ঋণ নিয়েছে তারা, সবগুলো পশ্চিমা দেশের কোম্পানি। সেগুলো উচ্চসুদে ঋণ নিয়েছে।’

‘মূলত, করোনা মহামারির সময় পর্যটনের ব্যবসায় ধস এবং অনেক বেশি অর্থপাচারের কারণে শ্রীলঙ্কার সে পরিণতি হয়েছিল। যদিও এখন কিছুটা সামাল দিয়েছে। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার জায়গায় নেই। আমাদের বড় আকারে ঋণ বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সঙ্গে। দেখা দরকার, আমি যে ঋণ নেবো, সেটা যে অর্থনৈতিক কাজে লাগাবো, সেখান থেকে টাকাটা তুলতে পারবো কি না। যেমন পদ্মা সেতু থেকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি টাকা উঠছে। আশা করি, সে ঋণ ঠিকমতো শোধ করতে পারবে।’ যোগ করেন অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জাগো নিউজকে বলেন, ‘চীন আমাদের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র। পাশাপাশি চীন আমাদের দেশে বিপুল পরিমাণ রপ্তানি করে আয় করে আসছে। চীনে প্রধানমন্ত্রীর আশু সফর বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের ভূমিকা আরও জোরদার করবে এবং দুই দেশের বাণিজ্য বৈষম্য কমিয়ে চীনে বাংলাদেশের পণ্য প্রবেশের দুয়ার আরও উন্মোচিত করবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।’

এ বিভাগের আরও খবর...

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  

Archive Calendar

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | নগর সংবাদ
Design & Developed BY:
ThemesCell