অনেকেেই কাঁটার ভয়ে মাছ খেতে চায় না, কিন্তু প্রক্রিয়াজাত করলে কিন্তু কাঁটাও নরম করে ফেলা যায় এবং খাওয়া যায়। সেটা খুব বেশি কঠিন না। এমনকি ঘরে বসেও করতে পারেন। ’
তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি প্রেসার কুকারে এক ঘণ্টা সিদ্ধ করেন, মাছের কাঁটা নরম হয়ে যাবে। সেটা বাচ্চাদেরও খাওয়াতে পারবেন। এতে কোনো অসুবিধা হয় না। একটু রেসিপিও দিয়ে দিলাম সঙ্গে। যাতে আপনাদের ঘরে কাঁটার সমস্যাটাও না থাকে। বিশেষ করে ইলিশের চেয়ে বেশি সময় লাগে সমুদ্রের মাছ, অন্য মাছ আরও কম সময় লাগে। ’
মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যদিও এ ধরনের রেসিপি তৈরি করি প্রেসার কুকার দিয়ে। মাছের কাঁটাগুলো নরম করতে পারি, কাঁটা নরম থাকবে কিন্তু মাছ যেমন আছে তেমনি থাকবে। ঠিক সেভাবে আমরা স্টিমজাত করতে পারি এবং দেশে-বিদেশে রপ্তানি করতে পারি। বহু দেশ কিন্তু মাছ নেবে। মৎস্যজাত বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে আমরা রপ্তানি করতে পারবো। ’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের নতুন প্রজন্ম তারা এগিয়ে আসবে। দেশে বেকারত্ব দূর হবে। সেই সঙ্গে দেশও রপ্তানিযোগ্য পণ্য পাবে, দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাও মিটবে। ’
মাছের উৎপাদন আরও বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মাছে ভাতে বাঙালি এই মাছে ভাতে বাঙালি হিসেবেই যেন আমরা থাকতে পারি। ’
তিনি বলেন, ‘যার যেখানে জলাধার আছে, সেখানে শুধু মাছ না, মাছের সঙ্গে কাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক সবকিছু চাষ করা যায়। সেগুলো করতে পারলে আমাদের নিজেদের কোনো অভাব থাকবে না, বরং রপ্তানির ক্ষেত্রে আমরা নতুন নতুন পণ্য দিতে পারব। ’
উদ্যোক্তাদের মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা একশ’টা অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি সমগ্র বাংলাদেশে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে আমি চাই আমাদের যুব সমাজ এগিয়ে আসুক। সেসঙ্গে এখানে আমাদের খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প, মৎস্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প, মাছ-মাংস সবকিছুই কিন্তু প্রক্রিয়াজাত করা যায়, সবগুলো আমরা যেমন সংরক্ষণ করতে পারি, বাজারজাতও করতে পারি। ’
এলাকাভিত্তিক উৎপাদিত পণ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তোলার ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘একেক এলাকায় একেক ধরনের খাদ্য উৎপাদন হয়, আমরা যদি খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তুলতে পারি। তবে নিজের চাহিদা পূরণ করে পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করতে পারবো। ’
আমিষ জাতীয় খাদ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ পুষ্টি দেয় মাছ, জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি পুষ্টির কথা বলি তবে সবচেয়ে নিরাপদ পুষ্টি পাওয়া যায় মাছ খেলে।
সমুদ্র এলাকায় জাল দিয়ে চিংড়ির পোনা আহরণ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এভাবে চিংড়ির পোনা আহরণ বন্ধ করতে হবে। এভাবে চিংড়ির পোনা আহরণ করলে অন্য মাছের পোনা নষ্ট হয়। সেসঙ্গে হ্যাচারি করে দিতে হবে।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মৎস্য চাষ ও মৎস্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় এ বছর ২১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় মৎস্য পদক-২০২২ দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী পক্ষে মৎস্য পদক তুলে দেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।