বৃহস্পতিবার ( ২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে পবিত্র ১২ই রবিউল আউয়াল ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ শহরে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী আল আবেদীর সভাপতিত্বে ও নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন সংলগ্ন হইতে পবিত্র জশনে জুলুস ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (দঃ) উদযাপন কমিটি নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জাম’আত নাঃগঞ্জ জেলার সহযোগীতায় বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম অশনে জুলুস মিছিলটি অনুষ্ঠিত হয়।
মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষীন করে পুনরায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে সামনে এসে সমাবেশের মাধ্যমে সমাপ্তি হয়। উক্ত সমাবেশে আওলাদে রাসূল আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজ্জাদ্দেদী আল- আবেদী আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন।
আখেরী মোনাজাতের পূর্বে সমাবেশে আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ্ মোজাদ্দেদী বলেন “পবিত্র ১২ই রবিউল আউয়াল শরিফে আল্লাহ তায়ালার সমস্ত সৃষ্টির জন্য রাহমাতাল্লিল আলামিন হিসেবে আমারদের প্রিয় নবী (দঃ) কে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন সমস্ত আলেমের জন্য রহমত হিসেবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনের ‘সূরা ইউনুস এর ৫৮ তম আয়াতে বলেছেন- “তোমরা আমার অনুগ্রহ বা রহমত প্রাপ্তিতে খুশি উদযাপন কর।” তাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারীরা এই দিনে খুশি উদযাপন করে মিলাদ মাহফিল, জশনে জুলুস মিছিল, রোজা, দান, সদকার মাধ্যমে পালন করে থাকে। বাংলার জমিনে সর্ব প্রথম ১৯৭২ খ্রিঃ ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী রাসূলে পাকের ৪০ তম বংশধর ইমামে রাব্বনী আবু নছর আল্লামা সৈয়দ আবেদ শাহ আল মাদানী (রাঃ)। তারই ধারাবাহিকতায় সাড়া বাংলাদেশে জশনে জুলুস ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (দঃ) উদযাপন করে থাকে।
তিনি আরো বলেন, দয়াল নবীজীর আগমনের দিন একমাত্র অখুশি হয়েছিলো কান্না করেছিলো ইবলিশ শয়তান, আজকে যারা ঈদ- এ-মিলাদুন্নবী (দঃ) এর বিরোধীতা করে তারা শয়তানের অনুসারী। আজকে সারাবিশ্বে অশান্তির কালোছায়া, যুদ্ধ, অর্থনৈতিক মন্দা, সামাজিক অবক্ষয়, ধনী-গরিবের বৈষম্য, জাতিগত দাঙ্গা পৃথিবীর কোথাও শান্তি নেই, এর একমাত্র কারন আমরা রাসূলে পাক (দঃ) এর আদর্শ থেকে দূরে সরে গিয়েছি। আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে, যে সময় শিশু কণ্যা সন্তান জন্ম নিলে জীবন্ত কবর দেয়া হত সে সময় রাসূলেপাক (দঃ) দূনিয়ার বুকে আগমন করে তার আদর্শ সমাজে বাস্তবায়নের মাধ্যমে দুনিয়ার বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। যদি আজ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হয় তাহলে রাসূলে পাক (দঃ) এর আদর্শ অনুসরণ অনুকরন এর বিকল্প নেই। আজ আমাদের দেশে একদিকে উন্নয়ন হচ্ছে, অন্যদিকে সরকারের কতিপয় দূর্নিতীবাজ চক্র বাংলাদেশকে দূর্নীতির আখড়ায় পরিনত করেছে।
তিনি আরো বলেন, সমাজের সর্বস্তরেদূর্নীতি, হাজার হাজার কোটি টাকা কিছু স্বার্থন্বেষী গ্রুপ অব কোম্পানীর মালিকেরা ব্যাংকের দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে দেশ থেকে পাচার করছে। মানুষের মৌলিক চাহিদা খাদ্য, সেই খাবার এর যোগানদাতা ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট এর কাছে আজ দেশের মানুষ জিম্মি। মানুষের মধ্যে বিন্দু পরিমান অনুতাপ নাই। বিগত ৫০ বছর ধরে চুরি করতে করতে এখন তারা ডাকাতে পরিনত হয়েছে। যদি এই অবস্থা থেকে দেশের মানুষ মুক্তি চায়। তাহলে মসজিদ থেকে সংসদ পর্যন্ত রাসূলে পাকের আদর্শ বাস্তবায়ন ছাড়া বিকল্প কোন পন্থা নাই। তাই বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত এর একক রাজনৈতিক সংগঠন “ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ” “চেয়ার প্রতিকে’ আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আমরা বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে সমাধান চাই। বিশৃঙ্খলা, চুরি নয় শাস্তি চাই, তার একমাত্র সমাধান হচ্ছে আমরা সকল দলের অংশগ্রহণমূলক সরকারের প্রভাবমুক্ত স্বাধীন নির্বাচন কমিশন চাই। যেই নির্বাচন কমিশন প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনের ভোটাধিকার প্রয়োগে জনগনের রায়কে প্রাধান্য দিয়ে বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনবে। তাই আসুন সকল মানব রচিত মতবাদকে ভূলে গিয়ে কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র কায়েমের লক্ষ্যে স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি। অতপর মোনাজাতে বাংলাদেশ ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পীরজাদা, সৈয়দ মাহমুদ শাহ্ মোজাদ্দেদী ভাইস চেয়ারম্যান, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব সভাপতি, জশনে জুলুসে ঈদ-এ-মিলাদুন্নাবী উদযাপন কমিটি, মোঃ আমানত উল্লাহ খন্দকার আরমান সাধারণ সম্পাদক, জশনে জুলুসে ঈদ-এ-মিলাদুন্নাবী উদযাপন কমিটি, মোঃ সাইফুদ্দীন সাংগঠনিক সম্পাদক, মোঃ গোলাম রাজু কোষাধ্যক্ষ, হাজী মোঃ নুরুল ইসলাম, সভাপতি, হিজবুর রাসূল, নারায়ণগঞ্জ জেলা, মোঃ তারিকুল হাসান লিংকন ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, আলহাজ্ব জামাল উদ্দীন মৃধা সাবেক সভাপতি জশনে জুলুসে ঈদ-এ-মিলাদুন্নাবী উদযাপন কমিটি, শাহাদাত হোসেন শ্যামল সাবেক সাধারণ সম্পাদক ঈদ-এ-মিলাদুন্নাবী উদযাপন কমিটি, এড. এ এম এম একরামুল হক সভাপতি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ নাঃগঞ্জ জেলা, মোঃ সাদ্দাম হোসেন কাউসার, সাধারণ সম্পাদক, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ নাঃগঞ্জ জেলা, মোঃ রাহাত হোসেন রাব্বি যুগ্ম আহ্বায়ক, ইসলামিক যুব ফ্রন্ট বাংলাদেশ, মোঃ নাঈম দপ্তর সম্পাদক ঈদ-এ-মিলাদুন্নাবী উদযাপন কমিটি ও দেশবরেণ্য ওলামায় কেরামগণ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ।