প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ১৫, ২০২৪, ১০:০১ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ আগস্ট ২৯, ২০২৩, ১০:০২ পূর্বাহ্ণ
এম এল এম ব্যবসা মূল মন্ত্র মিথ্যা,বানোয়াট, প্রতারনার প্যাকেজ গল্পের চলমান হালচাল
এম এল এম ব্যবসা মূল মন্ত্র মিথ্যা,বানোয়াট, প্রতারনার প্যাকেজ গল্পের চলমান হালচাল....
প্রতিবেদক: মাহবুব আলম: বিগত কিছুদিন আগে কুমিল্লার কাগজ এ সম্পাদকীয় কলামে ছাপা হয়েছিল "মিথ্যা আশ্বাস ও প্রলোভন দিয়ে সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের খবর মাঝেমধ্যেই চোখে আসে গণমাধ্যমের কল্যানে । বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে মানুষের কাছ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটছে অহরহই । প্রক্রিয়াগত ,ও গঠনতন্ত্র পলিসির মাধ্যমে কখনো সমবায় প্রতিষ্ঠানের নামে, কখনো প্রতিষ্ঠানের নামের শেষে ব্যাংক শব্দটি ব্যবহার করে আবার মাল্টিপারপাস কোম্পানি বা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসার নামে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রচারনামূলক পদ্ধতিতে । একাধিক সংঘবদ্ধ চক্র অর্থ আত্বসাতের এই প্রতারণা ব্যবসায় সক্রিয় রয়েছে এই বাংলাদেশেই । বাংলাদেশে এমএলএম কম্পানির যাত্রা শুরু অনেক আগেই। শুরু থেকেই ‘প্রতারণার ফাঁদে’ পড়ে যায় অনেকে। বাংলাদেশে প্রথম দুটি এমএলএম কম্পানি পণ্য ও কমিশন রেখে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বাংলাদেশে ৩৪টির মতো এমএলএম কম্পানি কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করে বন্ধ হয়ে গেছে। গাঢাকা দিয়েছেন নেপথ্যের ব্যক্তিরা। এর আগে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার তদন্তে এমএলএম কম্পানি অস্বচ্ছ, অস্পষ্ট বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব কম্পানি সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর অনুমোদন ও তদারকি প্রক্রিয়াকে পাশ কাটিয়ে কিংবা সুকৌশলে উপেক্ষা করে দিন দিন ব্যবসার প্রসার ঘটিয়েছে। এক পর্যায়ে কোনো ঘোষণা ছাড়াই ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। এ রকম একটি খবর এসেছে পত্রিকান্তরে। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, যুবক, ডেসটিনির পর এবার এমএলএম ব্যবসার নামে প্রায় হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ (এমটিএফই)। এমএলএম কম্পানির এই প্রতারণায় জড়িয়ে সর্বস্বান্ত দেশের লক্ষাধিক যুবক। এমটিএফই দাবি করেছিল, তারা কানাডায় নিবন্ধিত সংস্থা। তারা ব্যবসা করত অ্যাপের মাধ্যমে।
ক্রিপ্টো, বৈদেশিক মুদ্রা, পণ্য, এমনকি বিদেশি স্টক পর্যন্ত নিজের ছায়া প্ল্যাটফরমে ট্রেড করার সুযোগ দেওয়া এই অ্যাপ সম্প্রতি অবিশ্বাস্য রকমের জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। ট্রেডিং থেকে উপার্জন এবং অর্থ পরিশোধের কথা বলে অ্যাপটি ব্যবহারকারীদের অবিশ্বাস্য সহজ পথে অর্থ আয়ের আমন্ত্রণ জানায়। বাংলাদেশে মোট কতজন এই স্কিমের প্রতারণার শিকার হয়েছে, এর কোনো স্পষ্ট তথ্য কোথাও নেই। কমপক্ষে ৫০০ ডলার বিনিয়োগ করলে দিনশেষে পাঁচ হাজার টাকা লাভ হবে-এমন কল্পিত মুনাফার লোভে এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ মানুষ বিনিয়োগ করেছিল এই কম্পানিতে। এই কা-ে প্রায় হাজার কোটি টাকা খুইয়েছে বিনিয়োগকারীরা। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য এই কম্পানির লেনদেন বা ট্রেড হতো সপ্তাহে পাঁচ দিন বাংলাদেশি সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত। অ্যাপের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং বা ফিন্যান্সের মাধ্যমে তারা টাকা নিত। পরে স্থানীয় এজেন্টরা সেটি বাইরে পাচার করত। প্রতারকচক্র গ্রাহকদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে নানা তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে অ্যাপটি পরিচালনা করত। বাংলাদেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা এবং ক্রিপ্টো কারেন্সিতে লেনদেন অবৈধ ও নিষিদ্ধ। প্রতারণার সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানটি দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। বিটিআরসি, বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট নিশ্চয়ই বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। ভবিষ্যতে আর কেউ যেন এ ধরনের প্রতারণামূলক ব্যবসা খুলে বসতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। মানুষও সচেতন হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
Copyright © 2024 নগর সংবাদ. All rights reserved.