ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ‘শেখ রাসেল দিবস’ পালিত
হাকিকুল ইসলাম খোকন, সিনিয়র প্রতিনিধি( যুক্তরাষ্ট্র ):
শেখ রাসেলের হত্যাকান্ড বিশ্বের ইতিহাসে চরমতম মানবাধিকার লঙ্ঘন । রাষ্ট্রদূত ইমরান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহিদ শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন উপলক্ষে বুধবার (১৮ অক্টোবর) ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘শেখ রাসেল দিবস’ পালন করা হয়।খবর বাপসনিউজ ।এ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে শহিদ শেখ রাসেলের স্মরণে দূতাবাস বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র থাকাকালীন ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যা করে।দূতাবাসের দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে ছিল রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ, শহিদ শেখ রাসেলের জীবনী নিয়ে সেমিনার, শেখ রাসেল ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং শিশু-কিশোরদের মধ্যে কুইজ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান কর্তৃক শহিদ শেখ রাসেল ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন যথাক্রমে মিনিস্টার (কনস্যুলার) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) মোঃ রাশেদুজ্জামান। পরে শহিদ শেখ রাসেলের জীবনী নিয়ে একটি থিম সং ও একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এরপর দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে “শেখ রাসেল-এর নির্মম হত্যাকান্ড ও মানবাধিকার” শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কাউন্সেলর (পলিটিক্যাল) আরিফা রহমান রুমা।
রুমা তার মূল বক্তব্যে বলেন, শেখ রাসেল এখন বাঙালি জাতির জন্য সবচেয়ে বেদনাদায়ক ট্র্যাজেডির নাম এবং শেখ রাসেলের হত্যাকান্ড পৃথিবীর সবচেয়ে নির্মম আর ঘৃণ্যতম শিশূ হত্যার ঘটনা।১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডকে কারবালার ট্র্যাজেডির সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ড সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্র ও জাতির অগ্রযাত্রাকে চিরতরে নিস্তব্ধ করে দেয়ার ষড়যন্ত্রের বাস্তবায়ন। মিনিস্টার (প্রেস) এজেডএম সাজ্জাদ হোসেনও সেমিনারের মূল বক্তব্যের উপর আলোচনায় অংশ নেন এবং বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ১৫ আগস্ট কালো রাতে বঙ্গবন্ধু ও ১0 বছর বয়সী শেখ রাসেলসহ শিশু এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হত্যা করে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত করেছে। রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান সেমিনারে তার সমাপনী বক্তব্যে শহিদ শেখ রাসেল এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের অন্যান্য শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। রাষ্ট্রদূত তার বক্তৃতায় শহিদ শেখ রাসেলের অনন্য গুণাবলী তুলে ধরেন এবং বলেন ১৯৭৫ সালের ১৫.আগস্ট কালো রাতে বঙ্গবন্ধু ও শিশু শেখ রাসেলসহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা বিশ্বের ইতিহাসে মানবাধিকারের চরমতম লঙ্ঘন। তিনি বলেন এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র এবং জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে।বিকেলে শিশুদের অংশগ্রহণে এক চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে পরে শিশুদের উপস্থিতিতে কেক কাটা হয় এবং শহিদ শেখ রাসেল ও ১৫ আগস্টের অন্যান্য শহিদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। রাষ্ট্রদূত ইমরান কর্তৃক চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে দিনের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। দুই পর্বের এই অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এবং প্রথম সচিব (ভিসা ও পাসপোর্ট উইং) মুহাম্মদ আবদুল হাই মিল্টন ।