খাষপুখুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ অবকাঠামো সংকট: চৌহালীতে কার্যালয় ছাড়াই চলছে পরিষদের কার্যক্রম
চৌহালী(সিরাজগঞ্জ)প্রতিনিধি।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার ৬নং খাষপুখুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের কোন কার্যালয় নেই। অবকাঠামো সংকটে নিজস্ব কার্যালয় ছাড়াই চলছে পরিষদের সেবা কার্যক্রম। সেবা নিতে আসা মানুষের কষ্ট আকাশ সমান, সমাধানে ৩০ বছরে কেউ এগিয়ে আসনি। ২০০১ সালে যমুনা নদীর ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে যায় পরিষদের নিজস্ব অবকাঠামো। সেই থেকে ভাসমান খাষপুখুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ। ডিজিটাল, বিঙান, প্রযুক্তি ও সরকারের উন্নয়ন ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে সরকার ১৯৯৬ সালে বৃহত্তর মিরকুটিয়া ইউনিয়নকে বিলপ্ত ঘোষণা করা হয়। তৎকালীন সময়ে মিরকুটিয়া ইউনিয়ন ভেঙে ৩টি নতুন ইউনিয়ন নাম করণ করা হয়। ইউনিয়ন গুলো হচ্ছে ৬নং খাষপুখুরিয়া, ৭নং বাঘুটিয়া ও ৫ নং খাষকাউলিয়া। ১৯৯৭ সালে খাষপুখুরিয়া ইউপিতে প্রথম নির্বাচনে বিজয়ী হন মো, মালা সরকার। তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েই সাবেক মিরকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব অবকাঠামো ব্যবহার করেন। ৩ বছর না যেতেই নদী গর্বে বিলীন হয়ে যায় সকল স্থাপনা। সেই থেকে ঘর ভাড়া ঘরে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালিয়ে আসেন। পরবর্তী ইউপি নির্বাচনে বিজয়ী হন মো, মিজানুর রহমান মাস্টার, তিনি একটানা ১৫ বছর দায়িত্ব আমলে কোদালিয়া বাজার একটি ঘর অস্থায়ী কার্যালয়ে দাপ্তরিক কাজ পরিচালনা করে আসছেন। পরের নির্বাচনে চেয়ারম্যান হন আঃ মজিদ সরকার, তিনি মোকার ভাঙ্গায় ভাড়া ঘরে পরিষদের কার্যক্রম চালান। গত ইউপি নির্বাচনে জনগনের আস্তা আর ভালবাসায় মিজানুর রহমান মাস্টারকে আবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন জনগন। এখনো কোদালিয়া বাজার অস্থায়ী কার্যালয়ে দাপ্তরিক ও সেবামুলক কাজ চালিয়ে আসছেন। ভুক্তভোগী জনসাধারণ জানান, পরিষদের নিজস্ব ভবন (অবকাঠামো) নেই ফলে জীবনের ঝুঁকি আর রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অতি কষ্টে সেবা নিতে হচ্ছে। জনগনের কষ্ট প্রায় ৩০ বছর, আমরা এর পরিত্রাণ চাই নিজস্ব জমি ও আধুনিক ভবন দেখতে চাই। একটি ভবনই বদলে দিতে পারে ইউনিয়ন পরিষদ ও এলাকার উন্নয়ন চিত্র। তথ্য সুত্রে জানা যায়, তৎকালীন সময়ে চেয়ারম্যান মোঃ মালা সরকারের ক্ষমতা আমলে পরিষদের অবকাঠামো নদী গর্বে চলে গেলে ঘর ও আসবারপত্র কখনো নিজ বাড়ি কখবো খোলা আকাশের নিচে আবার কারো আঙ্গিনায় এভাবেই ঘরের টিন ও আসবার পত্র নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মোঃ মিজানুর রহমান। ঘর ও স্থাপনা ছাড়াই নিজ উদ্যোগে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় কোদালিয়া বাজারে ভাড়া ঘরে অতি কষ্টে দাপ্তরিক ও সেবামুলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। পরিষদ ভাসমান দুই যুগ পেরিয়ে গেছে এখনো জমি ও অবকাঠামো না থাকায় জনবল ও ইউনিয়ন বাসির কষ্ট আকাশ সমান, সমাধান করা হয়নি ৩০বছরেও। এতে খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা ব্যাপক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। উপজেলা পরিষদ এর পাশেই কোদালিয়া বাজারে ভাড়া ঘরে নিরাপত্তাহীন পরিবেশ,দপ্তর সংকট সহ নানাবিধ সমস্যা নিয়ে সার্বিক কার্যক্রম চালাতে গিয়ে নানা রকম হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিষদ কর্তৃপক্ষের । ইউনিয়ন পরিষদে দায়িত্ব পালনে যেমন অসুবিধা স্টাফদের-তেমনি সেবা নিতে আসা মানুষের কষ্ট আকাশ সমান। দীর্ঘ ৩০বছরেও সেবা বৃদ্ধির লক্ষে নজর পরেনি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের। জেলে মো, রহিম বলেন আমরা মাছ শিকার ও বিক্রি করে জীবন চালাতে হয়, মৎস্য খামার বা গরু মোটা তাজা করন প্রকল্প চালু করা বড় প্রয়োজন, এতে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে ইউনিয়ন পরিষদ এবং বারবে রাজস্ব এমনটাই প্রত্যাশা। কৃষক মো, আবু সায়েদ বলেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে তোলা হোক গরুর খামার, নদীর তীর হোক যমুনা সৈকত ও বিনোদন কেন্দ্র, এতে বেকারত্ব ঘোচাবে সরকারের রাজস্ব বাড়বে। ঁতাত শিল্প ব্যবসায়ী মো, সালাম বলেন, চৌহালীর উন্নয়ন ও বেকারত্ব ঘোচাতে তাত শিল্প ও কুটি শিল্প বৃদ্ধি বাস্তবায়নে সরকারের সুদৃষ্টি বড় প্রয়োজন। কার্যালয় ছাড়াই ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে জানিয়ে উদ্যোক্তা মো, রাসেদুল ইসলাম সজিব বলেন, দুই যুগ আগে খাষপুখুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম ছিল খাষপুখুরিয়া গ্রামে। কালের স্রোতে হারিয়ে যাওয়া ইউনিয়ন পরিষদ আজও ভাসমান, দীর্ঘ দিনেও আলোর মুখ দেখছে না। নিজস্ব জমি ও অবকাঠামো না থাকার ফলে শত কষ্ট উপেক্ষা করে জনসেবা ও দাপ্তরিক কাজ করতে হচ্ছে। তাই বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা মন্ডলীদের সুদৃষ্টি কামনা করছি। পরিষদে স্টাফ ও ভুক্তভোগীদের সেবা সুনিশ্চিতে টেকসই উন্নয়ন ও ডিজিটাল ইউনিয়ন কমপ্লেক্স প্রয়োজব বলে মনে করেন ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম মকদম। খাষপুখুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান তার সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, আমরা অনেক প্রতিকুলতার মধ্যে দিয়ে সার্বিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের কোনো বিকল্প নেই। সেবা প্রদানে যেমন অসুবিধা হচ্ছে তেমনি সরকারের প্রদত্ত মালামাল রাখতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে খাষপুখুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় দেখে হতাশা ব্যক্ত করেছেন পরিদর্শকরা। তবে ওই পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। পরিষদের জমি ও অবকাঠামো নির্মাণ দেখতে বারবার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়েছি,সার্বিক উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সরকার, প্রশাসন এবং অন্যান্য অংশীদারদের সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করে সমাজের প্রত্যেকটি মানুষের উন্নতি নিশ্চিত করতে খাষপুখুরিয়া ইউপি এবং তার আশেপাশের জনগণের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করতে দরকার অবকাঠামো। তিনি আরও বলেন, "আমাদের ইউনিয়নে সমস্যা নদীভাঙন, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ভাসমান পরিষদের মাধ্যমে এইসব পরিবারের চাহিদাগুলো সমাধান নিশ্চিত করতে উন্নত টেকসই খাষপুখুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স গড়ে তুলতে বর্তমান সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।