কুমিল্লার হোমনায় গরম ইস্ত্রির ছ্যাঁকা দিয়ে হেফজ বিভাগের এক শিক্ষার্থীর দুই নিতম্ব এবং পায়ের তলা পুড়িয়ে ফেলেছেন মাদরাসার মুহতামিম হাফেজ মো. সাইফুল ইসলাম (২৮)। এই ঘটনায় এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আব্দুল কাইয়ুম (১৬) উপজেলার চান্দের চর গ্রামের আবদুল কাদিরের ছেলে।
এ ঘটনায় শিক্ষক আতিকুল ইসলাম (২৮) নামে এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার শ্রীকাইল গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে। অভিযুক্ত মুহতামিম হাফেজ মো. সাইফুল ইসলাম (২৮) উপজেলার নয়াকন্দি গ্রামের রেণু মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনায় নির্যাতিত শিক্ষার্থীর মা হাফেজা বেগম মাদরাসার মুহতামিম হাফেজ মো. সাইফুল ইসলাম হাবিব, সহযোগী শিক্ষক আতিকুল ইসলামসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে হোমনা থানায় মামলা দায়ের করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুছ ছালাম সিকদার বলেন, রোগী দেখে মনে হয়েছে, ১০ থেকে ১২ দিন আগেই পুড়েছে। পোড়া দুই নিতম্বেই ঘা হয়ে যাওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার তাকে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী শিশু আবদুল কাইয়ুম জানান, ওই দিন সে তার অন্য সহপাঠীদের সঙ্গে দুষ্টুমি করছিলেন। এক ফাঁকে তার পরনের লুঙ্গি খুলে যায়। এর শাস্তি হিসেবে ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে মুহতামিম অফিসে কক্ষে নিয়ে শিক্ষক আতিকুল এবং তিন শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় তার নিতম্ব এবং পায়ের তলায় গরম ইস্ত্রি লাগিয়ে ছ্যাঁকা দেয়।
ভুক্তভোগী শিশুর মা হাফেজা বেগম বলেন, খাবার নিয়ে মাদরাসায় গেলে ছেলে কাইয়ুম আমাকে দেখে কাঁদতে থাকে। পরে তাকে বাড়িতে নিয়ে গেলে জখমের জায়গা দেখিয়ে আমাকে পুরো ঘটনা বলে। তারা আমার ছেলের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা বলেন, ছেলেটির খোঁজখবর নিয়েছি। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আবদুল কাইয়ুমকে গরম ইস্ত্রির ছ্যাঁকা দিয়ে দগ্ধ করার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।