গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে শেফালী খাতুন নামের এক গৃহবধুকে হত্যার পর থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন তার স্বামী মহসীন আলী। শনিবার (৮ জুলাই) রাত ৮টার দিকে মহসীনের বাড়ি থেকে শেফালীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় নিহতের হাতে থাকা একটি চিরকুটও উদ্ধার করা হয়।
আত্মসমর্পণকারী স্বামী মহসীন আলী (২৭) উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের কলেজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশের ধারণা, গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে শেফালীকে (২২) হত্যা করেন মহসীন। পরে শোবার ঘরের আড়ার সঙ্গে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চার বছর আগে মহসীনের সঙ্গে মোল্লাপাড়ার মৃত কাদের মোল্লার মেয়ে শেফালীর বিয়ে হয়। মহসীন কোনো কাজ করতেন না। পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে তাদের সংসারে ঝামেলা লেগেই থাকতো। পাশাপাশি সন্তান না হওয়ায় শেফালীর ওপর ক্ষুদ্ধ ছিলেন মহসীন।
শনিবার সন্ধ্যায় ঝগড়াঝাটির একপর্যায়ে মহসীন ওড়না দিয়ে গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে শেফালীকে খুন করেন। পরে এটিকে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করতে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শেফালীর হাতে একটি চিরকুট ছিল। তাতে লেখা ছিল, আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়, কারও কোনো দোষ নেই। এরপর সে প্রতিবেশিদের জানিয়ে নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।
এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান সাদুল্লাপুর থানায় আসেন। সেসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি খুনের ঘটনা। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মহসীন আলী অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতার কারণে হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। তাছাড়া তিনি তার স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে সন্দিহান ছিলেন।
‘মহসীনের দাবি, শেফালী কুফরি কালাম করতেন, যা তার পছন্দ ছিল না। এসব কারণে তিনি স্ত্রীকে হত্যা করেন। তবে পুরো ঘটনা আরও ব্যাপকভাবে তদন্ত করা হবে।’
সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চিরকুটটি মহসীনের লেখা বলেই মনে হচ্ছে। নিজের উপর থেকে সন্দেহ সরাতে তিনি এ কাজ করতে পারেন। পুলিশ ঘটনাটি আরও খতিয়ে দেখছে। পরবর্তীকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।