নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গাজী গ্রুপের টায়ার তৈরির কারখানায় লাগা আগুন দীর্ঘ ২১ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। ফায়ার সার্ভিসের ১২ ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম এ তথ্য জানান।
তালহা বিন জসিম বলেন, রোববার (২৫ আগস্ট) রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন লাগে গাজী গ্রুপের টায়ার তৈরির কারখানায়। প্রথমে সাত ইউনিট ও পরে আগুন বেড়ে গেলে আরও ৫ ইউনিট যোগ হয়। মোট ১২ ইউনিটের চেষ্টায় ২১ ঘণ্টা পর আনতে সক্ষম হই।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি আগুন আর আশপাশে ছড়ানোর সম্ভাবনা নেই। তবে এখানে রাবার ও প্লাস্টিকের মত দাহ্যপদার্থ থাকায় আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণ করতে আরও সময় লাগবে। এখনও ভেতরে অনেক দাহ্যপদার্থ আছে।
ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা বলেন, গতরাত থেকে এ পর্যন্ত ১৪ জনকে উদ্ধার করে তাদের স্বজনের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। যাদের সামান্য ইনজুরি ছিল, তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। এছাড়া এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি হবে। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এলে কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট রাতে বিক্ষুদ্ধ জনতা ও ভুক্তভোগীরা রূপসীর গাজী টায়ার কারখানায় আগুন দেয়। এরপর শনিবার (২৪ আগস্ট) রাতে গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজীকে ঢাকার শান্তিনগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার (২৫ আগস্ট) বিকেলে গাজীর গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে একই কারখানায় দ্বিতীয় দফায় আগুন দেওয়া হয়।
গাজী টায়ার কারখানার অ্যাডমিন অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, রোববার বিকেল ৩টার দিকে কারখানার মেইন গেট ও পেছনের গেট দিয়ে দুটি গ্রুপ ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর লুটপাট শুরু করে তারা। একপর্যায়ে কারখানার অভ্যন্তরে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। এরপর রাত ৯টার দিকে প্লাস্টিকের পলি সেকশনের চারতলা একটি ভবনে আগুন দেওয়া হয়। পরে রাত ১০টার দিকে কেমিক্যালের গোডাউনে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। সেই আগুন এখনো জ্বলছে।
কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম আরও জানান, কারখানাটিতে টায়ার প্রস্তুতের জন্য প্রচুর প্লাস্টিকজাতীয় কাঁচামাল ও দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। তাই আগুনের তীব্রতা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
এদিকে, কারখানায় নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের কারখানার সামনে আহাজারি করতে দেখা গেছে।