নগর সংবাদ।। যশোরে এক গৃহবধূকে গাছে বেঁধে মারধর ও মাথার চুল কেটে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (৮ নভেম্বর) তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এর আগে রোববার (৭ নভেম্বর) কোতোয়ালি থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও দুই থেকে তিন জনের নামে মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ। তিনি যশোর সদর উপজেলার মালঞ্চী মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। যশোর জেলা পুলিশ পরিদর্শক রূপন কুমার সরকার জানান, ওই গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় সাতজনের নামে মামলা হয়েছে।
তারা হলেন, যশোর সদর উপজেলার মালঞ্চী মধ্যপাড়া গ্রামের আবদুল কাদের বিশ্বাসের ছেলে রাজিবুল হক শিমুল (৩০), হায়দার আলীর ছেলে রিপন হোসেন (৩০), আকবর আলীর ছেলে আজগর আলী (৩০), পেচো আলীর ছেলে আকতার আলী (৩২), আজগর আলীর মেয়ে বিউটি খাতুন (২৮), আজগর আলীর স্ত্রী বিলকিস বেগম (২৫) ও রিপন হোসেনের স্ত্রী জোসনা বেগম (২২)। এছাড়াও অজ্ঞাত আরও দুই থেকে তিন জন। আসামিদের মধ্যে রোববার (৭ নভেম্বর) রিপন, বিউটি, বিলকিস, জোসনাকে এবং সোমবার (৯ নভেম্বর) আজগর ও আকতারকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এর আগে শনিবার (৬ নভেম্বর) যশোর সদর উপজেলার মালঞ্চী গ্রামে ওই গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। জানা যায়, গত নয় মাস আগে ওই গৃহবধূর প্রথম স্বামী মারা যান। মারা যাওয়ার আগে স্ত্রীকে চার শতাংশ জমি লিখে দেন তার স্বামী।
ওই জমির ওপর চোখ পড়ে গৃহবধূর স্বামীর চাচতো ভাই আজগর হোসেন ও রিপন হোসেনের। এ কারণে গত ছয়মাস আগে গৃহবধূর নামে পরকীয়ার অভিযোগ তোলেন তারা। এ অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় সালিশে গৃহবধূকে প্রতিবেশী এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে দেন স্থানীয় মাতব্বরা। বিয়ে হলেও প্রথম স্বামীর দেওয়া জমিতেই গৃহবধূ বসবাস করে আসছিলেন। সম্প্রতি আজগর ও রিপন জমি ফেরত নেওয়ার জন্য গৃহবধূকে চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। এনিয়ে শনিবার দুপুরে সালিশ বৈঠক বসার সিদ্ধান্ত হলে আজগর ও রিপনের নেতৃত্বে আট থেকে ১০ জন গৃহবধূকে মারধর করতে যান।
এক পর্যায়ে ওই গ্রামের মেম্বর পদপ্রার্থী শিমুল গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বাঁধার নির্দেশ দেন। পরে তাকে গাছে বেঁধে মারধর করে মাথার চুল কেটে, মুখে চুনকালি মাখিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তারা। গৃহবধূকে বাঁচাতে দ্বিতীয় স্বামীর ছেলে এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করেন রিপন ও আজগর। এক পর্যায়ে দু-গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে গৃহবধূর ছেলেসহ আজগর ও রিপন আহত হন। পরে দু-পরিবারের স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।