পাঁচ বছর আগে রাজধানীর কদমতলী থানা এলাকায় শিউলী আক্তার নামে এক গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য হত্যা মামলায় স্বামী রিপন গাজীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (১০ মে) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক রোকসানা বেগম হ্যাপী এ রায় দেন।
রায় ঘোষণার সময় রিপনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আরিফ হোসাইন তালুকদার এসব তথ্য জানান।
জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১৩ জানুয়ারি রিপন গাজী ও শিউলী আক্তার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর তাদের দুটি পুত্র সন্তান হয়। তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকেন। ২০১২ সালের ১২ জুলাই রিপন গাজী পারভীন বেগম নামে আরেকজনকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর রিপন প্রথম স্ত্রী শিউলীকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতে থাকেন। তাকে ৮০ হাজার টাকা দেয়াও হয়। আরও এক লাখ টাকা যৌতুকের জন্য শিউলীকে নির্যাতন করেন রিপন।
২০১৬ সালের ২৫ জুলাই যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে শিউলী কদমতলী থানায় রিপনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরই মধ্যে রিপন শিউলীকে তালাক দেয়। শিউলী তিন বছর বাবার বাসায় থাকেন। ছেলেদের কথা চিন্তা করে তিন বছর পর পুনরায় তারা বিয়ে করে আলাদা বাসা নিয়ে বসবাস শুরু করেন।
এরপর পারভীনের কথামতো রিপন এক লাখ টাকা যৌতুকের জন্য শিউলীকে আবার মারধর করেন। ছেলেদের কথা চিন্তা করে শিউলী সব সহ্য করে আসছিলেন। ২০১৮ সালের ৬ মার্চ শিউলী ও রিপন বাসায় ছিলেন। তাদের দু’ছেলে ছিল তাদের ছোট খালার বাসায়। পরদিন দু’ছেলে বাসায় এসে দেখে তাদের মা মৃত রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। তাদের বাবা বাসায় নেই।
এ ঘটনায় শিউলীর বাবা মনির হোসেন ৭ মার্চ রিপন ও পারভীনকে আসামি করে যৌতুকের জন্য মৃত্যুর অভিযোগে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে কদমতলী থানার উপ-পরিদর্শক লিটন মিয়া ২০১৮ সালের ৩০ জুন রিপনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন।
২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রিপনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।