রাজধানীর চকবাজারের এক বাসায় নজরুল ইসলাম (৪৬) নামে এক ব্যবসায়ীর মরদেহ পেয়েছে পুলিশ। তার হাত-পা বাঁধা ছিল।
গলায় কাপড়ও প্যাঁচানো ছিল। এ ছাড়া পুরুষাঙ্গও ছিল কাটা। বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে চকবাজারের ইসলামবাগ আরএনডি সড়কের একটি ভবনের পঞ্চম তলার একটি কক্ষে গিয়ে মরদেহটি পায় পুলিশ। পরে সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
সুরতহাল প্রতিবেদনে চকবাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিল্লুর রহমান উল্লেখ করেন, ডিসেম্বরের ১ থেকে ৩ তারিখের মধ্যে যেকোনো সময় ওই ব্যবসায়ীকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
নিহত ব্যবসায়ীর ছোট ভাই তৌহিদুল ইসলাম তাপস জানান, ইসলামবাগ মাদরাসা গলিতে তার ভাইয়ের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ রয়েছে। এ ছাড়া শেয়ারে প্লাস্টিকের আরও একটি ব্যবসা রয়েছে। গত শুক্রবার স্ত্রী সুমি আক্তার তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যান। সে কারণে বাসায় একাই ছিলেন নজরুল।
সোমবার রাত ১০টার দিকে ওয়ার্কশপ থেকে বের হন নজরুল। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে তাকে কল করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাসায় গিয়েও বাইরে থেকে তালাবদ্ধ দেখা যায়। পরে ঘটনাটি গ্রামে থাকা তার ছেলে এবং স্ত্রীকে ফোনে জানানো হয়। পরে সন্ধ্যায় গ্রাম থেকে তার ছেলে ঢাকায় আসেন।
ছেলে চাবি দিয়ে ঘরে ঢুকে দ্রুত কক্ষ থেকে বাবার এনআইডি কার্ড নিয়ে চকবাজার থানায় যান নিখোঁজের জিডি করতে। তবে পুলিশ জিডি না নিলে পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে রাত দেড়টার দিকে ওই বাসায় ফেরেন। বাসার নিচ থেকে তাপস তার নিজের বাসায় চলে যান।
নজরুলের ছেলে তার বন্ধুকে নিয়ে রাতে থাকার জন্য তাদের বাসায় প্রবেশ করেন। বাসায় প্রবেশ করে এক কক্ষে তারা দেখতে পান, বিছানার উপর তার বাবা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। পরে খবর পেয়ে তাপসও সেখানে যান এবং দেখেন বিছানার ওপর হাত-পা বাঁধা, গলায় কাপড় প্যাঁচানো। বিছানা রক্তে ভেজা। পুরুষাঙ্গ কাটা। পরে তারা থানায় খবর দেন।
নজরুলের ভাই অভিযোগ করে বলেন, ওই বাসার দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, সোমবার রাতে নজরুল বাসায় ঢোকেন। এরপরে মঙ্গলবার সকালেই তার গাজীপুরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে তিনি এরপর তাকে আর দেখেননি। পরে বাসায় কে বা কারা ঢুকেছে তিনি কিছুই জানেন না।
তাপসের ধারণা, এ ঘটনার সঙ্গে তার বাসার দারোয়ান অথবা ম্যানেজার অথবা পরিবারেরও কেউ জড়িত থাকতে পারেন।