নারায়ণগঞ্জে চাঁদার দাবিতে জামাল হোসেন (৪৫) নামে এক গরুর খামারীকে তুলে নিয়ে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখমের অভিযোগ উঠেছে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শরীফুল হকের ভাতিজা অন্তর ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে টানা ৪০ মিনিট ওই খামারীকে লোহার পাইপ দিয়ে এলাপাথারী পিটিয়ে জখম করে নগদ ৫০ হাজার এবং ২ ঘন্টা পর স্ত্রীকে দিয়ে আরও ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ব্যবসায়ি জামাল হোসেন। ইতিমধ্যে জামাল হোসেন তার ওপর নির্যাতনের বিচার দাবি করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়া ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
থানায় লিখিত অভিযোগের বিষয়ে বাদী জামাল হোসেন জানান, আমি (জামাল হোসেন) ফতুল্লার এনায়েতনগর ৩ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দা। সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ফতুল্লা শাখায় ব্যবসায়িক কাজে গেলে অজ্ঞাত এক মোবাইল নম্বর থেকে আমাকে ফতুল্লা বাজারের সাথে প্রাইমারি স্কুলের সামনে আসতে বলে। সেখানে গিয়ে দেখি ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শরীফুল হকের ভাতিজা আনিসুল হক অন্তরসহ আরও ৫/৬জন দাঁড়িয়ে আছে। ওই সময় তারা আমাকে দেশীয় অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে লালপুর, ইসরাফিল রোড, হরিস চৌধুরীর গার্মেন্টেসের পার্শ্বে নিয়ে যায় এবং আমার সাথে থাকা পঞ্চাশ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। আমার ঘরে আরও পঞ্চাশ হাজার টাকা মোবাইল যোগে আমার স্ত্রী ইয়ানূরকে বাসা থেকে নিয়ে আসতে বলে। কিন্তু বাসা হতে টাকা আনতে দেরী করায় বিবাদীরা আমার হাত-পা ও মুখ বেঁধে মোটা লোহার পাইপ দিয়ে প্রায় ৪০ মিনিট পেটাতে থাকে। এ দৃশ্য গার্মেন্টে থাকা কর্মীরা দেখেছে। কিন্তু কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। কিছুক্ষন পর আমার স্ত্রী টাকা নিয়ে আসলে বিবাদীরা আমার স্ত্রীর নিকট হতে টাকা নিয়ে দ্রুত উক্ত স্থান ত্যাগ করে।
তিনি আরও জানান., আমার স্ত্রী আমাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায়। চিকিৎসার পরে আমার জ্ঞান ফিরলে আমার স্ত্রী আমাকে জানায় যে, বিবাদীরা আরও হুমকী দিয়েছে যে, এই বিষয়ে পুলিশকে জানালে আমার পা কেটে ফেলবে, জানে মেরে ফেলে লাশ গুম করে ফেলবে। আমাকে যে স্থানে নির্যাতন করা হয়েছে সে এলাকায় সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানো আছে, যা তদন্তে সহায়ক হবে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শরীফুল হক জানান, আমার ভাতিজা আমরা এক বাসায় থাকি না। এ ঘটনা সম্পর্কে জানা নেই।
জামাল হোসেনের স্ত্রী ইয়ানূর জানান, এতটা নির্মমভাবে মানুষকে পেটাতে পারে। আমি পায়ে ধওে চিৎকার কওে টাকা দিয়ে স্বামীকে মুক্ত করেছি। পাশে থাকা গার্মেন্টের কর্মীরা পুরো বিষয়টি দেখেছে। কিন্তু কেউ ভয়ে এগিয়ে আসেনি।
এ বিষয়ে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার এস আই শফিকুল ইসলাম জানান, বাদীকে ফোন দিয়েছিলাম ঘটনাস্থলে যেতে। কিন্তু সে ভয় পাচ্ছে। আমরা তাকে অভয় দিয়েছি এর সুষ্ঠ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।