আবু সাউদ মাসুদ সম্পাদক ও প্রকাশক দৈনিক সোজাসাপটা
১৯৮১ সালের ৭ অক্টোবর দিবাগত রাত ২টা। অর্থাৎ ৮ অক্টোবর বুধবার। জীবনের অনেক স্মৃতি, বিস্মৃতির অতল গহবরে মিলিয়ে গেলেও এই দিনের বেদনার স্মৃতি আজও অশ্রু সজল করে তোলে দু’চোখকে। যা হারিয়েছি তা এ জনমে পুরণ হবার নয়। বটবৃক্ষ হারিয়ে আজও এক এবং একা পথ চলছি। জীবন পথের নানা বাকে চলতে চলতে আজ আমি ক্লান্ত। দেখতে দেখতে পরিনত বয়সে এসে পৌছেছি। এখন শুধুমাত্র বেঁচে আছি মৃত্যুর অপেক্ষায়। আশপাশের পরিচিত অনেকেই পরপাড়ে পাড়ি জমিয়েছে। হয়তো ভাবছেন কেন আমি এ ধরনের বেদনা মিশ্রিত হতাশার কথা বলছি। আজ আমার বাবা চিত্রশিল্পী নূর মোহাম্মদের ৩৯তম মৃত্যু বার্ষিকী। প্রতিবছরই এ মাসটি এলে আমার মধ্যে এক ধরনের পরির্তন চলে আসে। বারে বারে মনে হয়, কবে হবে মৃত্যু আমার। কখন পরপাড়ে মিলিত হব আমার আদর্শ, নীতিবান ও একজন উত্তম পিতার সঙ্গে। প্রতিনিয়তই কামনা করি হে আল্লাহ আমার বাবাকে তুমি ভাল রেখো। রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানি ছগিরা। দীর্ঘদিনের অতিযত্নে লালন করা একটি আশা নিয়ে বসে আছি। বসে থাকতে হবে মৃত্যু অবধি। প্রত্যাশা শুধু একটিই মৃত্যুর পর আমাকে যেন আমার বাবার সঙ্গে বসবাসের ঠিকানাটা পাই। হে রহমানুর রহিম জীবনে যদি একবিন্দুও তোমার নাম স্মরণ করে থাকি তার বিনিময়ে হলেও পরপাড়ে আমার আশ্রয় স্থানটি আমার বাবার সঙ্গে করে দিও। আমীন। সকলের কাছে অন্তত এইটুকু দোয়া ভিক্ষা চাই, আমার প্রয়াত বাবার জন্য দোয়া করবেন এবং আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে আমার পরজনমের ঠিকানাটা আমার বাবার সঙ্গে হয়। দুনিয়াতে কি পেয়েছি আর কি পাইনি সে হিসাব করিনি কোনদিন। কিন্তু পরকালের এই একটি চাওয়া যেন মহান রাব্বুল আলামীন কবুল করেন। ইহ জগতে খুব বেশীদিন বাবার সান্নিধ্য পাইনি। মাত্র ৪৬ বছর বয়সেই তিনি আমাদের দু’ভাই, দু’বোন ও মাকে রেখে চলে যান না ফেরার দেশে। বাবার সেই অকৃত্রিম ভালবাসার সঙ্গে এ জীবনে আর কারো ভালবাসাকে একত্রিত করতে পারিনা। কি পরিবার, কিংবা স্বজন অথবা আমার পরিচিত মহলে। নি:স্বার্থ এ ভালবাসা হারানোর দহনে আজও পুড়ছি আমি। জানিনা আর কতদিন পুড়তে হবে। আমি ফিরে যেতে চাই আমার সেই Lost of Love এর সান্নিধ্যে। আবু সাউদ মাসুদ সম্পাদক ও প্রকাশক দৈনিক সোজাসাপটা