চৌহালীতে বৈন্যা দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদরাসা বিনা বেতন-ভাতায় চাকরি করছে ১৩ শিক্ষক
চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি। "শিক্ষার জন্য এসো সেবার জন্য বেরিয়ে যাও" শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড, তাই আনুষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা বৈন্যা গ্রামে অবস্থানরত দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদরাসার কোন বিকল্প নেই। এ প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রতি বছর পাবলিক পরীক্ষায় এ প্রতিষ্ঠান থেকে অংশ গ্রহন করে মেধা তালিকায় থাকলেও আজও নন-এমপিওভুক্তি প্রতিষ্ঠান। সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার খাষপুখুরিয়া ইউপিতে বৈন্যা গ্রামের দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসাটি স্থাপন করা হয় ১৯৯৭সালে। সেই থেকে বিনা বেতন-ভাতায় চাকরি করে আসছেন শিক্ষকরা।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, বৈন্যা গ্রামে ১একর জমিতে একটি টিনের ঘরে দাখিল পড়ুয়া ১৭১ ও এবতেদায়িতে ১৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য পাঠদানে ১৩ জন শিক্ষক রয়েছে। চৌহালী উপজেলার বিভিন্ন নন-এমপিও প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়, তাঁরা ‘নন-এমপিও ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা এবং শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবেন। মাদ্রাসার শিক্ষকরা জানান, বছরের পর বছর বিনা বেতনে চাকরি করায় পরিবার নিয়ে চরম দুঃসময় পার করছেন তাঁরা। অনেকেই আর্থিক সংকটে ভুগছেন, কেউ কেউ বিকল্প পেশায় যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
১৯৯৭ সালে নিজ উদ্যোগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানসহ গুনিজনদের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত এই মাদ্রাসায় একই বছর সুপার হিসেবে যোগদান করেন তিনি। কিন্তু এত বছরেও মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত হয়নি। ফলে কোনো বেতন-ভাতা ছাড়াই শিক্ষকতা করে মানবেতর জীবন যাপন করছেন মাদরাসার কর্মরত শিক্ষক কর্মচারিরা। “সারা জীবন চাকরি করেও বেতন পেলাম না। এখন অবসরের দ্বারপ্রান্তে এসে শুধুই আফসোস নিয়ে দিন গুনছি। এমপিওভুক্তির জন্য বহুবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্থানীয় এমপি ও মন্ত্রীদের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি। কিন্তু কোনো আশার বাণী পাইনি। তিনি আরও জানান, আমার মতো চৌহালী উপজেলার আরও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী একই দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন। বৈন্যা মাদ্রাসার সুপার রফিকুল ইসলাম তার শেষ ইচ্ছা জানিয়ে বলেন, “মরার আগে অন্তত আমার প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তি দেখতে চাই।”এ অবস্থায় তাঁরা দ্রুত এমপিও ভুক্তির দাবি করে আসছেন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, খাষপুখুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক -কর্মচারীরা চরম কষ্টে আছে। পরিবারের খরচ চালানো দায় হয়ে পড়েছে।
সরকারের কাছে দ্রুত এমপিওভুক্তির দাবি জানাচ্ছি।”তিনি আরও বলেন, আমাদের নন এমপিও প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি বছর দাখিল পরীক্ষা অংশ গ্রহন করে উত্তীর্ণ হয়ে মাদরাসাকে উজ্জল করে আসছে শিক্ষার্থীরা। অবকাঠামো সহ নানা সংকটে থাকা সত্ত্বেও দাখিল পরীক্ষার রেজাল্ট এগ্রেড সহ সন্তষ্টজনক ফলাফল রয়েছে। তাই আমরা মাদরাসাটি এমপিওভুক্তি জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তাঁদের দাবি দ্রুত এসব নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করে শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবনমান রক্ষা করুন। এছাড়াও অবকাঠামো নির্মাণ সহ প্রতিষ্ঠানে সকল সমস্যা সমাধানে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো, মোস্তফা কবির ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সহ উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করে আসছেন বলে প্রতিষ্ঠাতা সুপার মোঃ রফিকুল ইসলাম এ-প্রতিবেদককে এ সব কথা জানিয়েছেন।