জনগনের গোলাম হিসেবে কাজ করবো”নেত্রী আদেশ দিলে নির্বাচন করবো: সেলিম ওসমান
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা এ কে এম সেলিম ওসমান বলেছেন, আমি যে ভালোবাসা পেয়েছি তা কতজন অর্জন করতে পেরেছে সেটা আমি জানি না। আমি যখন কাজ শুরু করেছি, তখন আমি বলেছি আমি জনগনের গোলাম হিসেবে কাজ করবো। সাড়ে ৯ বছর ধরে আমি গোলাম হিসেবেই কাজ করেছি। কোথায় বাসা, কোথায় ঘর আমি সেটা দেখি নাই। যেখানে ডেকেছে সেখানেই গিয়েছি। ডাকতে শুধু সময় লেগেছে, আমার আসতে সময় লাগেনি। গোগনগরে অনেক কাজ করার সুযোগ ছিলো, কিন্তু আমি সেই কাজ করতে পারি নাই। আমি লজ্জা রেখে কথা বলতে চাই না, গোগনগনের মানুষের প্রতি আমার অনুরোধ রইলো, আপনারা দলাদলি কইরেন না। আমি যতবারই আসছি, ততবারই দেখি আপনাদের মধ্যে দলাদলি আছে। এ দলাদলি থাকলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম কিন্তু ভালো করতে পারবে না। দলাদলি, ঝগড়া-ঝাটির কারণে আমাদের ছেলে-মেয়েরা শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না এই এলাকাতে।
গোগনগর ইউনিয়নের নির্বাচিত পরিষদ ও বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজর আলীর সভাপতিত্বে রবিবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
সেলিম ওসমান আরও বলেন, আমি নির্বাচিত হলাম কি হলাম না, নির্বাচন করলাম কি করলাম না এটা বড় কথা নয়। আমি একটা কথাই বলবো, আজকে আমার ৭টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা, কাউন্সিলররা, মেম্বাররা আমাকে যথেষ্ট সহযোগীতা করেছে। এজন্য আমি জনগনের কল্যাণে কাজ করতে পেরেছি। একটা কথা মনে রাখবেন, একজন মানুষ হয়ে আপনি যদি আরেকজন মানুষকে ভালোবাসতে না পারেন তাহলে আপনি কেমন মানুষ। এটা সংসার করার ভালোবাসা নয়, মানুষ হয়ে মানুষের প্রতি ভালোবাসা।
তিনি বলেন, আমি আগেও আপনাদের বলেছি, আপনাদের এলাকার মধ্যে কেউ যেন দ্বিধা দ্বন্দ্বে না থাকে। আসেন, আমরা যদি সবাই এক থাকতে পারি, একত্রিত হয়ে কাজ করতে পারি তাহলে আমাদের ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি ভবিষ্যত প্রজন্ম সুখে থাকতে পারবে।তিনি আরও বলেন, অনেকে আমাকে চিঠি পাঠিয়েছে, ফোন করেছে এই স্কুলের অডিটরিয়ামে ছুটির দিনে যাতে বিয়ের অনুষ্ঠানের অনুমতি দেই। এটা আমার বিষয় না, স্কুলটা হলো সরকারের, আর সরকার হলো জনগনের। তাই জনগনের যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে স্কুল কমিটি সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে এখানে বিয়ের অনুষ্ঠানের অনুমতির জন্য ডিসি সাহেবের সাথে যাতে কথা বলে। আর পিছনে একটা জায়গা আছে, যেটার জন্য অনেক মুসল্লী আমাকে ফোন করেছে। কেউ বলে এটা স্কুলের জায়গা, কেউ বলে এটা অন্য জায়গা। এই জায়গার বিষয়ে আপনারা যারা মুরুব্বী আছেন, সবাই একসাথে বসেন। জায়গাটা যদি স্কুলের বাইরের জায়গা হয় তাহলে অবশ্যই সেখানে মসজিদ নির্মাণের ব্যবস্থা করা হোক। এগুলি কিন্তু চেয়ারম্যান বা মেম্বারদের রিকোয়েস্ট না, আমার গোগনগরের মানুষ আমাকে টেলিফোন করে বলেছে।
সেলিম ওসমান বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়র প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আসেন আমরা সবাই দোয়া করি পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার কাছে, আমরা যেন ভালো থাকতে পারি। আর ভালো থাকার একটাই উপায়, তা হলো শেখ হাসিনার সরকার। শেখ হাসিনার সরকার যদি আগামী ৫ বছরের জন্য আবারও ক্ষমতায় আসে, তাহলে করোনার সময়ে ৩ বছরের গ্যাপ এবং গত ১৫ বছরের উন্নয়ন যদি একসাথে করেন তাহলে দেখতে পাবেন আমরা কোথায় গিয়ে পৌছেছি। ইতিমধ্যেই দেশ ডিজিটাল হয়েছে, এখন আমরা ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে যাচ্ছি। এটা করতে পারবেন না, আমার রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে দাও, আগুন জ্বালিয়ে দাও, বাস পুড়িয়ে দাও, মানুষের ক্ষতি করো, বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ করো দাও, পরীক্ষার সময় আপনারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করবেন এটা তো হতে পারে না। এটা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আপনারা সবাই একত্রিত হোন। আপনাদের গ্রামে, মহল্লায়-ইউনিয়নে একটা বাচ্চারাও যেন লেখাপড়া ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার বন্দোবস্ত আপনাদের করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন, আমি যাতে জোর গলায় বলতে পারি, হারাম খাবো না, হারাম খেতে দিবোও না। আমি জোর গলায় যাতে বলতে পারি, কেউ কারো জমি জোর করে দখল করতে পারবে না। এই কাজটা আমি করেছি, আমি মানুষের বাহবা পেয়েছি। হয়তো অনেকে আমাকে গালাগালিও করেছেন, হয়তো আমাকে পছন্দ করেন না তাই গালাগালি করেন, আমার পোষ্টার সরিয়ে ফেলেন। অথবা আমি ভালো কাজ করতে গেলে কারো ক্ষতি হতে পারে, তারা গালাগালি করেন।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজির মাদবর, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, ১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না, সমাজ সেবক আলমাস আলী, আলী আকবর, আওয়ামীলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেহ উদ্দিন মন্ডল, নাজির ফকির, মজিবুর রহমান, কালা চান, রুস্তম আলী প্রমুখ।