প্রিন্ট এর তারিখঃ জানুয়ারী ১৫, ২০২৫, ৬:০৫ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জানুয়ারি ১৫, ২০২৫, ৯:১৮ পূর্বাহ্ণ
জলঢাকায় কম্বল বিতরণ করতে গিয়ে নারীর সম্ভ্রমহানী,থানায় অভিযোগ করায়, ভুক্তভোগী পরিবার বাড়ি ছাড়া।
জলঢাকায় কম্বল বিতরণ করতে গিয়ে নারীর সম্ভ্রমহানী,থানায় অভিযোগ করায়, ভুক্তভোগী পরিবার বাড়ি ছাড়া।
স্টাফ রিপোর্টার ।।সন্ধ্যা বেলায় কম্বল বিতরণ করতে গিয়ে বাড়ি ফাঁকা পেয়ে গৃহবধূকে সম্ভ্রহানির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইউনিয়ন সমন্বয়কের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের নেকবক্ত কুটিপাড়া এলাকায়। ভুক্তভোগী পরিবারটি থানায় অভিযোগ দিলে নানা ধরণের হুমকির স্বীকারসহ নিজ বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করলেও নানা ধরণের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত (৯জানুয়ারী) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী গৃহবধূর কাছে একাই কম্বল বিতরণ করতে যায় রবিউল ইসলামের ছেলে মোস্তাক শাহরিয়ার মিঠুন (২২)। কিন্তু ওই গৃহবধু কম্বল নিতে গেলে মিঠুন বাজে ইঙ্গিত দিয়ে সম্ভ্রমহানীর উদ্দেশ্যে শরীরে হাত দিলে চিৎকার করে ওই ভুক্তভোগী নারী। পরে তার স্বামী ও স্থানীয়রা এসে মিঠুনকে ঘরে আটকিয়ে রাখে। কিন্তু মিঠুনের পরিবারের লোকজন অস্ত্রে-সস্ত্রে সুজ্জিত হয়ে এসে ভুক্তভোগী নারীর শরীরের পোষাক ছিড়ে শ্লীলতাহানী ঘটায়। এছাড়াও বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে প্রায় ১লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। পরে দেশীয় অস্ত্র উঁচিয়ে প্রকাশ্যে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে মিঠুনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। অভিযোগ সূত্রে সরেজমিনে গেলে জানা যায়, অভিযুক্ত মিঠুন সন্ধ্যার পরে একাই কম্বল বিতরণ করতে গিয়েছিল ওই গৃহবধূর বাড়িতে। আটকিয়ে রাখছিলো ভুক্তভোগী পরিবারটি। পরে মিঠুনের পরিবারের লোকজন অস্ত্র-সস্ত্রে এসে বাড়ি ভাঙচুর করে তাকে নিয়ে যায়। এসময় দেখা যায়, ভুক্তভোগী পরিবারটির বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। অভিযুক্তের পরিবার তাকে নানাভাবে নানা ধরণের হুমকিও দিচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন বলেছেন, ঘটনার দিন মিঠুন একাই গিয়েছিলো ওই গৃহবধূকে কম্বল দিতে। যদি তার সৎ উদ্দেশ্য ছিলো, তাহলে সে একাই গেল কেনো? আর কোন কাউকে তো সাথে নিতে পারতো। তারা আরও বলেন, মিঠুনের পরিবার এই এলাকার মধ্যে প্রভাবশালী হওয়ায় ভুক্তভোগী পরিবারটিকে নানাভাবে নির্যাতন করছে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ জানায়, সন্ধ্যার পরে এসে আমাকে কম্বল দেয়া হলে আমি কম্বল নিয়ে বিছানায় রেখে রান্না ঘরে যাই। ওখানে দেখি মিঠুন দাড়িয়ে আছে। আমাকে বাজে ইঙ্গিতে বলছে কিছু কথা আছে। এরপর টিউবয়েলের কাছে আমাকে জড়িয়ে ধরে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। আমি চিৎকার করলে আমার স্বামীসহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন এসে তাকে আটকিয়ে রাখে পুলিশে খবর দেয়ার জন্য। কিন্তু তার আগেই মিঠুনের পরিবারের লোকজন এসে আমার পড়নে থাকা পোষাক ছিড়ে ফেলে আমার শ্লীলতাহানীসহ আমার বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এখন মেরে ফেলার হুমকিসহ নানা ধরণের হুমকি দিচ্ছে মিঠুনের পরিবার। ভুক্তভোগীর স্বামী জানান, আমি বাজারে গিয়েছিলাম। বাড়িতে ঢোকার সময় আমার বউয়ের চিৎকার শুনতে পাই। চিৎকার শুনে তারাহুড়া করে বাড়িতে ঢুকে দেখি ওই ছেলে আমার বউকে জড়িয়ে ধরে আছে। পরে আরও স্থানীয় বেশ কয়েকজন আসলে বিচারের জন্য তাকে ঘরে আটকিয়ে রাখি। অভিযুক্তকে আটকের পর তার নিকটাত্মীয় মিজু, খায়রুল, নুর হোসেন, সাদিকুল ও লিটনসহ অনেকে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার বাড়িতে প্রবেশ করে। চাটি বেড়া ভাঙচুর করে আনুমানিক এক লাখ টাকার ক্ষতিক্ষতি করে। তারা মিঠুনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করেন। বর্তমানে তাদের ভয়ে আমরা নিজ গৃহালয়ে যেতে পারছি না। শোনা যাচ্ছে তারা নাকি আমার বউয়ের গলায় জুতার মালা ঝুলিয়ে বেইজ্জত করবে। তারা অনেক প্রভাবশালী, মামলা বাতিলের জন্য নানাভাবে মিথ্যা রটাচ্ছে। এবিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মিঠুনকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের লোকজনের কাছে মুঠোফোনের নাম্বার নিয়ে কল দিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। কিন্তু তার পরিবারের লোকজন দূষছে ভুক্তভোগী নারীকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জলঢাকা উপজেলা সমন্বয়ক আহসান হাবীব রক্সির সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমাদের বরাদ্ধ আসে ১৩’শ কম্বল। আমরা প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় বিতরণের জন্য ভাগ করে দিয়েছি। সব ইউনিয়নে সঠিকভাবে বিতরণ করা হয়েছে। তবে ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নে মিঠুনসহ আরও বেশ কয়েকজনকে বিতরণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তবে একটা নারী জনিত ঘটনার অভিযোগ উঠেছে, বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করা হবে। এবিষয়ে জলঢাকা থানার আরজু মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন জানায়, ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করেছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Copyright © 2025 নগর সংবাদ. All rights reserved.