বিগত ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় সোনারগাঁওয়ে মহাজোটগত রাজনৈতিক প্রবণতা বিরাজমান ছিলো। জোটের রাজনীতির মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সৌহার্দ্য স্থাপনের সুযোগ থাকে। যা সংঘাতের রাজনীতির বিপরীতে সম্প্রীতির রাজনীতি প্রবর্তন করতে পারে। বর্তমানেও এই ধারা অব্যাহত আছে।
উন্নয়নের অগ্রযাত্রার স্থপতি আমার মাতৃতুল্য নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার চাহিদা অনুযায়ী সোনারগাঁয়ের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদান করায় আমি সোনারগাঁওবাসীর সেবক হিসেবে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যানবৃন্দ, সোনারগাঁও পৌর মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ, পৌর কাউন্সিলরবৃন্দ, ইউপি সদস্যবৃন্দসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং মহাজোটে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ স্বাধীনতা পক্ষে অপরাপর রাজনৈতিক দল এর সমন্বয়ে উন্নয়নমূলক কাজ করে আসছি।
সোনারগাঁবাসীকে শান্তিতে রাখা এবং সোনারগাঁওয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই আমার লক্ষ্য। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা যখন এই রাজনৈতিক চর্চা করে সোনারগাঁওয়ে শান্তি-স্থিতিশীলতা বজায় রেখে সুষ্ঠু-সুন্দর-সু-শৃঙ্খল গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখার মাধ্যমে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির রাজনীতি প্রবর্তন করতে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি- ঠিক তখনই এক শ্রেণীর ষড়যন্ত্রকারীরা এলাকার আধিপত্য বিস্তার ব্যক্তি সার্থে সোনারগাঁওয়ের রাজনীতিতে পারষ্পরিক বিদ্বেষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে সোনারগাঁওয়ের জন্য সমূহ বিপর্যয় অপেক্ষা করছে। বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে লিয়াকত হোসেন খোকা আরো বলেন, এর সঙ্গে রাজনৈতিক দলের কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু কোনো ধরণের অপকর্ম ও বিতর্কিত কর্মকান্ডের সঙ্গে যদি জাতীয় পার্টি কিংবা আমার নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ জড়িত হয় তার জন্য সে অপরাধী, দল অপরাধী হতে পারে না। ব্যক্তিগত দল ভারি করার জন্য জাতীয় পার্টি এই সমস্ত কলঙ্কের বোঝা টানতে পারে না।
ব্যক্তিগত ভাবে কেউ কোনো ধরণের অপকর্ম ও বিতর্কিত কর্মকান্ড করলে সেই অপকর্ম ও বিতর্কিত কর্মকান্ডের দ্বায় আমি এবং আমার দল জাতীয় পার্টি বহন করবো না। তাদের অপকর্মের জন্য জাতীয় পার্টির অর্জন ম্লান হতে দেওয়া যেতে পারে না। সোনারগাঁওয়ে তৃণমূল পর্যন্ত তাদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। আমাদের অঙ্গীকার আছে- জাতীয় পার্টিতে কোনো স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি ও বিশৃঙ্খলাকারীদের স্থান হবেনা।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি এদেশের গণমানুষের আস্থার প্রতিক। তাই সরকার ও দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। যদি আমার কোনো আত্মীয়-স্বজন, আমার দলের নেতাকর্মী ও কিংবা আমার কোনো ব্যক্তিগত স্টাফ কোনো ধরণের বিতর্কিত কর্মকান্ড করে অথবা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হয়, সেই দ্বায়ভার আমি বহন করবো না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এমনকি যারা অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশয় দিবে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আমার প্রিয় সোনারগাঁওবাসীর প্রতি আমি অনুরোধ করছি, যদি কেউ কোনো অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত হয় তাহলে আইনের আশ্রয় নিবেন। প্রয়োজনে আপনারা সরাসরি এসে আমাকে জানাবেন। আমি আইনের আওতায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
লিয়াকত হোসেন খোকা আরো বলেন, আমি ২০১৪ সালে সোনারগাঁওয়ের সংসদ সদস্য হওয়ার পর চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী মাদক ব্যবসায়ী ভূমিদস্যু এবং বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িত এমন ব্যক্তিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেইনি। ভবিষতেও দিব না ইনশা’আল্লাহ। অনিয়ম-দুর্নীতি ও সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান কঠোর। অপরাধী কে, কোন দল করে, কতটা প্রভাবশালী সেদিকে না তাকিয়ে অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করি।
আমি সোনারগাঁবাসীর খাদেম হিসেবে সেবা করার লক্ষ্যে আমার পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে করেছি। সোনারগাঁওয়ের মাটি ও মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করে আসছি। প্রতিটি এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাদের সুখ-দুঃখ কষ্টের কথা শুনেছি। রাস্তাঘাট ব্রীজ-কালভার্ট স্কুল কলেজ মসজিদ মাদ্রাসার উন্নয়নে কাজ করেছি। পুরো সোনারগাঁওয়ে ঘুরে ঘুরে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে উন্নয়নমুলক কাজ করেছি। এখনও অনেক উন্নয়নমূলক কাজ চলমান রয়েছে।
জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ তথা সোনারগাঁও অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করছি। আমি চেষ্টা করেছি এবং করছি একজন নিবেদিত প্রাণ সেবক হিসেবে সোনারগাওঁবাসীর সেবা করতে। মহান আল্লাহ তা’আলা আমাকে যতদিন সুযোগ দিবেন, আমি ততদিনই সোনারগাঁবাসীর একজন সেবক হিসেবে কাজ করে যাবো।
তিনি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের পথ চিরতরে বন্ধ করার আহ্বান জানান এবং আত্মত্যাগ ও সততার মাধ্যমে সোনারগাঁওবাসীর কল্যাণের পাশাপাশি সংগঠনকে শক্তিশালী করতে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।