প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪, ১১:৫৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ২৪, ২০২২, ৯:২১ পূর্বাহ্ণ
জীবন যেখানে থমকে যায় কবি -আজমির হোসেন রুবেল।
জীবন যেখানে থমকে যায়।
আজমির হোসেন রুবেল।
গল্প নয়, সত্যি।
আমার একটা মেডিসিন কনার আছে। লক্ষ করলাম, একটা লোক এসে প্রায় প্রতি দিনেই সি ভিট নিয়ে যায়।
একদিন জিজ্ঞেস করলাম, এতো সি ভিট দিয়ে কি করেন আপনি ?
লোকটা হাসলো, বললো, খাই।
প্রতি দিন ?
লোকটা সে কথার উত্তর দিল না, অন্য দিকে তাকিয়ে রইল।
এক দিন পরে আবার এলো সি ভিট নিতে।
কথা বলে জানার চেষ্টা করলাম সে কি করে।
বড় মার্কেটে তার একটা বেগ সুটকেসের দোকান ছিল, বেচাকেনা না হতে হতে ভাড়া দিয়ে আর র্কম চারির বেতন দিয়ে এতটা লস হয়ে গেল, যে তাকে ফুতুর হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। বৌ বাচ্চা দেশের বাড়ি পাঠিয়ে সে এখন একজনের বারান্দায় থাকে।
জিজ্ঞেস করলাম,এখন কি করা হয় ?
বেগ হাতে নিয়ে ফেরি করে বিক্রি করি।
সমস্যা হয় না?
গামছা দিয়ে মুখ মাথা ভাল করে পেচিয়ে নেই, যাতে কেউ চিনতে না পারে।
সারা দিনে কত বেচা হয় ?
দেরশ, দুইশ, কখনো পঞ্চাশ।
এতে লাভ থাকে কত ?
লোকটা সেকথার উত্তর দিল না, ম্লান হাসলো সুধু।
খাওয়া দাওয়া কি ভাবে চলে?
খাই,খাই না যে,তা না।
তার না খাওয়া সুকনো চেহারার কথাটা আমার বুকে কেমন যেন একটা ধাক্কা লাগলো। তার পরও বললাম, কি খান ?
মুড়ি খাই,কোন দিন কলা খাই। তয় কলার দামটা বেশি হইয়া গেছে, সে জন্য সি ভিট খাই। সি ভিটটা ভিটামিন ,কি কন ?
হু।
তিন বেলা সি ভিট খাইয়াই থাকা যায়। দামও কম।
চম্কে উঠে তাকালাম। তার ঘন ঘন সি ভিট নেয়ার রহস্যটা বুঝতে পারলাম। এই মানুষটা তিন বেলা সি ভিট খেয়ে জীবন যাপন করছেন। খুবই লজ্জিত বোধ করলাম। আশ্চর্য জনক একটা অপরাধে ঘিরে ধরলো আমাকে। সত্যিই অবাক হই,এদেশের বড় বড় মান্দাদের কথা শুনে। দেশ নাকি উন্নতির দিকে এগিয়ে চলেছে। এদিকে মানুষ না খেয়ে থাকে। কেউ কি বলতে পারবেন,দেশে না খাওয়া মানুষের সংখ্যা কত ? আর দেশে যখন কোন সমস্যা হয়, তখন কেন প্রধানের দিকে সুধু হাত তুলে দেন, নিজেদের দোষটা দেখেন না ?
Copyright © 2024 নগর সংবাদ. All rights reserved.