নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমি যখন তোলারাম কলেজের ভিপি ছিলাম। প্রচুর পাওয়ারফুল ছিলাম।
এখনকার দশটা এমপির চেয়েও পাওয়ার বেশি ছিল সে সময়। তবুও নয়শ টাকার জন্য ফরম পূরণ করতে পারিনি। আমার বড় ভাই একজনের বাড়িতে গিয়েছিলেন নয়শ টাকার জন্য, নাম বলছি না৷ তারা সেদিন বলেছিল বন্ধক রাখার মতো কিছু কী আছে। তখন জীবন কানাই চক্রবর্তী স্যার আমার ফরম পূরণ করে দিয়েছিলেন। আমার সইয়ে হাজারও ছেলের ফরম পূরণ হয়েছে, কিন্তু আমি আমারটা করিনি। এটাই ছিল নৈতিকতা। এখনো নৈতিকতা নিয়ে রাজনীতি করতে চাই। এখন চারদিকে এত খাই খাই, মনে হয় মানচিত্র খেয়ে ফেলবে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ভালো'র অফিস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ছোট্ট এ দেশে সতেরো কোটি মানুষ না হয়ে যদি কম হতো তাহলে আমরা ঘরে বসে খেতে পারতাম। তবে আলহামদুলিল্লাহ আমরা ভালো আছি। জনসংখ্যা বেশি সেটাই আমাদের জন্য এখন শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি আমরা যাদের দান করছি মনে হয় বিশাল ভালো কাজ করছি। এটা ভালো কাজ ঠিকই তবে তারচেয়ে বড় হলো যে সুযোগ দিচ্ছে। তৃষ্ণার্তকে পানি পান করালেন, যে তৃষ্ণার্ত আপনার পানি পান করল সেটা বড় বিষয়। সে যে দোয়া করবে সেটা সরাসরি আল্লাহর দরবারে পৌঁছে যাবে। দান করে দোয়া চাইতে হয় না। যাকে দান করবেন সে যখন ভাববে তার উপকার হয়েছে তখন এটার গুরুত্ব বেশি।
শামীম ওসমান বলেন, এ পৃথিবী আপনাকে কিছু দেবে না৷ দরকার আপনার শেষ ঠিকানায়। সত্য হলো আমাদের যেতে হবে। আমি এটা মানি। তাই প্রতি রাতে তওবা ও নামাজ পড়ে ঘুমাই। কারণ কালকে আমি বাঁচব কীনা জানি না। আমরা প্রত্যাশা নামে একটি সংগঠন করেছি। গরমের জন্য এটা আটকে আছে। তবে গরম কমলেই আমরা প্রতিটি এলাকায় এ কার্যক্রম শুরু করবো।
তিনি বলেন, টাকার অভাবে চিকিৎসা না হওয়ার কষ্ট আমি ভোগ করেছি। ২০০১ সালের পর আমেরিকা ছিলাম যখন, আমি আমার মেয়ের জন্য এন্টিবায়োটিক কিনতে পারিনি। আমাদের দিন অনেক কঠিনভাবে গেছে। আমাদের বড় বড় নেতা ও আত্মীয় ছিল। তারা এগিয়ে আসেনি।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীতে চারিদিকে যুদ্ধ। বড় দেশগুলো যদি বলে আগামী দুই বছর আমরা কোনো অস্ত্র বানাবো না। যদি তিন বছরের জন্য ওরা বলত আমরা অস্ত্র তৈরি করবো না তাহলে পৃথিবীর একটা মানুষকেও না খেয়ে থাকতে হবে না। আশা করি পৃথিবীর বড় বড় নেতাদের এ সেন্সটা হবে। পৃথিবীর মানুষগুলো ভালো থাকবে।