নড়াইলে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ডিবি পরিচয়ে অপহরণের নাটক ফাঁস করল পুলিশ। এ ঘটনায় কথিত ডিবি ইব্রাহিম মোল্যা, তার স্ত্রী ইরানী খাতুন, ইব্রাহিমের ভাই রুহুল আমিন ও চাচা রমজান আলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে এ তথ্য জানায় পুলিশ।
সাংবাদিক সম্মেলন জানানো হয়, গত ২ আগস্ট নড়াইল সদরের ইব্রাহিম মোল্যাকে (৩৮) ডিবি পরিচয়ে তিনজন তুলে নিয়ে গেছেন এই অভিযোগ করেন ইব্রাহিম মোল্যার স্ত্রী ইরানী খাতুন।
অভিযোগকারী ইরানী খাতুন সদর থানায় হাজির হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন যে, তার স্বামী ইব্রাহিম মোল্যাকে ওইদিন রাত অনুমানিক ৩টার সময় তিনজন ব্যক্তি ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে যায়।
অভিযোগে উল্লেখ করেন যে, তার স্বামীর সঙ্গে একটি জলমহলের ভোগদখল নিয়ে শত্রুতা ও হত্যা মামলা থাকায় প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্র মূলকভাবে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তার স্বামীকে তুলে নিয়ে গেছে।
সাজানো এ ঘটনার পরে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে উল্টো মানববন্ধন করাসহ প্রতিপক্ষের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের ও জিডি করার জন্য বিভিন্নভাবে চাপপ্রয়োগ করে ইব্রাহিম মোল্যার পরিবার। স্ত্রীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নড়াইল সদর থানায় একটি জিডি ও করা হয়। স্পর্শকাতর এই বিষয়টি নিয়ে নড়াইলের পুলিশ জেলা সাইবার টিমসহ একযোগে কাজ শুরু করে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৫ সেপ্টেম্বর ভোররাতে যশোর কোতোয়ালি থানার বকচর বিহারী কলোনি থেকে ইব্রাহিম মোল্যাকে উদ্ধার করা হয়। কথিত অপহৃত ভিকটিম ইব্রাহিম তার ভায়রা ভাই ডালিম হোসেনের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কথিত ভিকটিম ইব্রাহিম মোল্যা স্বীকার করেন, জলমহল নিয়ে বিরোধ থাকায় শায়েস্তা করতে স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে পরিকল্পনা করে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনের নাটক সাজান।
পরিকল্পিত এই অপহরণ নাটকের সহযোগী স্ত্রী ইরানী খাতুনসহ জড়িত ইব্রাহিমের ভাই রুহুল আমিন ও চাচা রমজান আলীকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ওসি সাজেদুল ইসলাম জানান, মিথ্যা তথ্যে পুলিশের হয়রানি এবং প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টায় সদর থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এস আই) হায়াৎ মাহমুদ খাঁন বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি তদন্তাধীন।