নগর সংবাদ।।ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেট। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে সিলেট জেলা ও নগরের ৮০ ভাগ এলাকা।
একই সঙ্গে সুনামগঞ্জের ৯০ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ডুবে এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিপর্যয় ঘটে জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
গত ১৫ জুন থেকে সিলেট বিভাগে ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে বন্যার সৃষ্টি হয়। তাতে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানি ঘটেছে ২৩ জনের। এর মধ্যে সিলেটে ১৪ জন, সুনামগঞ্জে ৬ জন, মৌলভীবাজারে ৩ জন মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে মারা যাওয়াদের মধ্যে ২৩ জনের খবর জানতে পেরেছি। এর মধ্যে সিলেটে টিলাধসে একজন, বন্যার পানিতে বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে স্পৃষ্ট হয়ে ২ জন এবং নৌকাডুবিতে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলায় বজ্রপাতে ৩ জন ও বন্যার পানিতে ডুবে ৩ জন এবং মৌলভীবাজারে সাপের কামড়ে এক কিশোর, টিলাধসে একজন এবং বন্যার পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
সিলেটের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. জন্মেময় দত্ত বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে মা-ছেলেসহ সিলেটে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আহমেদ হোসাইন বলেন, জেলায় নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় অনেক তথ্য জানার বাইরে রয়ে গেছে। তবে এ পর্যন্ত বজ্রপাতে ৩ জন এবং বন্যায় ৩ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ছাতকে নৌকাডুবিতে এক ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যুর খবর পেয়েছি।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে আমাদের সিনিয়র ডিভিশনাল করেসপন্ডেন্ট বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখন পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে টিলাধসে একজন, বন্যার পানিতে ডুবে এক শিশু ও সাপের কামড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সর্বশেষ সিলেটের জৈন্তাপুরে বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়া মা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ জুন) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার ছাতারখাই গ্রামের হাওর থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন- উপজেলার মহালীখলা গ্রামের আজব আলীর স্ত্রী নজমুন নেছা (৫০) ও তার ছেলে রহমান মিয়া (১৪)।
জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোহাম্মদ দস্তগির আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বন্যার পানির তোড়ে মা-ছেলে গত শনিবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন। আজ তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ভয়াবহ বন্যায় সিলেট জেলায় ৮০ শতাংশ ও সুনামগঞ্জ জেলার প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা তলিয়ে যায়। এতে বিভাগের এক কোটি জনসংখ্যার অন্তত ৪০ শতাংশ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। বন্যায় জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।