ঢাকায় মহাসবেশে যোগ দিতে গিয়ে মিছিলের মধ্যেই হার্ট এ্যাটাকে মারা গেলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মো. মাহমুদূর রহমান।শুক্রবার (২৮ জুলাই) দুপুর সাড়ে বারোটায় রাজধানির নয়াপল্টনের কাছাকাছি ফকিরেরপুলে মিছিলের সামনের সারিতে থাকা অবস্থায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এ সময় মাহমুদ জ্ঞাণ হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দলীয় নেতা-কর্মীরা তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহমুদকে মৃত ঘোষণা করেন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু মাহমুদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঢাকায় পৌঁছে আমরা এক সাথে শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে সমাবেশের দিকে যাচ্ছিলাম।
এসময় মাহমুদ হার্ট এ্যাটাক করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন আমরা তাকে সাথে সাথে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাই। সেখানকার চিকিৎসক মাহমুদকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আমি তার পরিবারকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়ে তাদের ঢাকা মেডিকেলে আসতে বলি।
শোক প্রকাশ করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, এই অনাকাংখিত মৃত্যুর ঘটনার আমি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করছি। আমরা সবাই শোকাহত। মাহমুদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
মাহমুদুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, মাহমুদুর রহমানের মৃত্যুতে মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে গভীর শোক নেমে এসেছে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মৃত্যুকালে বিএনপি নেতা মাহমুদুর রহমানের বয়স হয়েছিল প্রায় ৬২ বছর। পরিবার নিয়ে শহরের ডনচেম্বার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন তিনি। তিন ছেলে সন্তান, ছয় ভাই ও তিন বোনসহ বহু আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন তিনি।
মাহমুদুর রহমান নারায়ণগঞ্জ বিএনপির একজন একনিষ্ঠ নেতা ছিলেন। প্রায় তিন দশক ধরে তিনি নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।
তার ছোট ভাই অপটিক্যাল ব্যবসায়ী মো. মাসুম বলেন, আমার মেয়ে এসএসসিতে জিপিএ ৫' পেয়ে তার চাচাকে ফোন করে রেজাল্টের খবর জানায়। এরপির আমিও মাহমুদ ভাইয়ের সাথে ফোনে কথা মাত্র বলি। তিনি জানালেন ঢাকায় পৌঁছে গেছেন।
একটু পর পর মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দিবেন। এর ঠিক দশ মিনিট পরেই খবর পাই আমার ভাই মিছিলে মারা গেছেন।
মাহমুদ এর ভাই মাসুম আরও বলেন, দুই বছর আগে ভাবী হার্ট এ্যাটাকে মারা যাওয়ার পর থেকে তিনিও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলেন। স্ত্রীর মৃত্যু শোকে তিনি নিজেও হার্ট এ্যাটাক করেন। এরপর থেকে তিনি হৃদরোগে ভুগছিলেন।
মাহমুদ ভাই ছিলেন আমাদের পরিবারের অভিভাবক। পারিবারিক যে কোন ব্যাপারে আমরা তার উপর নির্ভরশীল ছিলাম এবং তার পরামর্শমতো কাজ করতাম। ভাইকে হারিয়ে আমাদের পুরো পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে।