কুষ্টিয়ার মিরপুরে রাস্তায় গাছ ফেলে পথরোধ করে দুই সাংবাদিকের দুটি মোটরসাইকেল, ল্যাপটপ ও নগদ অর্থ ডাকাতির মামলায় তিন আসামিকে আট বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সাজাভোগের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া জেলা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম লালন।
তবে এ রায়ের সংবাদ শুনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মামলার বাদী বাবলু রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, সাংবাদিক আক্রান্তের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিচারহীনতার বাস্তবতায় এ রায়টি বিরল এক উদাহরণ। তবে আমি এটিকে বলতে চাই- ‘গুরু পাপে লঘু দণ্ড’।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- ইমারত আলী (২৬), শাহ জামাল (৩২) ও সিরাজ মল্লিক (৪০)। তারা সবার মিরপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা।
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় চার্জশিটভুক্ত অপর চার আসামি- সামসুল সর্দার ওরফে সাগর, শিপন শাহ, সাবদুল্লাহ ও আরিফ মণ্ডল গগনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
আর হাসানুজ্জামান ওরফে সেলিম ওরফে লালন নামে চার্জশিটভুক্ত আরেক আসামি ঘটনার কিছুদিন পর বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তার নাম বিচার প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১২ এপ্রিল রাত পৌনে ১০টায় মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামের ফাঁকা মাঠের রাস্তায় গাছ ফেলে পথরোধ করে দৈনিক গ্রামের কাগজ পত্রিকার কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ও মিরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বাবলু রঞ্জন বিশ্বাস এবং দৈনিক মানব জমিন পত্রিকার মিরপুর উপজেলা প্রতিনিধি মারফত আফ্রিদিকে মারধর করে বেঁধে মেহগনি বাগানে ফেলে তাদের মোটরসাইকেল (বাইক), ল্যাপটপ, নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ১০/১২ জনের একটি ডাকাত দল।
ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর তারা গভীর রাতে হামাগুঁড়ি দিয়ে দু’জন দু’জনের বাঁধন খুলে লোকালয়ে আসেন। এ ঘটনায় আক্রান্ত সাংবাদিক বাবলু রঞ্জন পরদিন ১৩ এপ্রিল বাদী হয়ে মিরপুর থানায় অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামি করে ডাকাতির মামলা করেন মিরপুর থানায়।
মামলাটি তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর থানার সেই সময়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল আলীম ২০১৭ সালের ৩১ মে আটজনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এদের মধ্যে আসামি ইমারত ও শাহ জামাল ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে নিজেরা দায় স্বীকার করেন এবং জড়িত অন্য ছয়জনের নাম উল্লেখ করেন।