নগর সংবাদ।।প্রায় পাঁচ বছর আগে মোছা. আকলিমা আক্তার স্বপ্নার (৩২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয় আনোয়ার হোসেনের। এই সুযোগে দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্নার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের চেষ্টা করে আসছিলেন তিনি। কিন্তু স্বপ্নার অসম্মতির কারণে তা সম্ভব হয়নি।
সবশেষ ১ জানুয়ারি ধর্ষণের চেষ্টা চালান রিকশাচালক আনোয়ার। এতে ব্যর্থ হয়ে স্বপ্না ও তার মাকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান আনোয়ার।
কিন্তু এ হত্যার ক্লু পাচ্ছিল না পুলিশ। এরপর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) শুরু করে ছায়া তদন্ত। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় শনিবার (৮ জানুয়ারি) রাতে আনোয়ারকে শনাক্ত করা হয়। এরপর তাকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে সিআইডির এলআইসি শাখার একটি টিম।
সিআইডি বলছে, প্রেমের সম্পর্কের জেরে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধা ও বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্বপ্নাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন আনোয়ার। বাধা দেওয়ায় তাকে ও তার মাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
রোববার (৯ জানুয়ারি) রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, ১ জানুয়ারি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার গোবিন্দপুরে একটি বাড়ি থেকে মা মোছা. জয়ফুল বেগম (৫০) ও তার মেয়ে স্বপ্নার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সিআইডির কর্মকর্তা মুক্তা ধর জানান, হত্যার পর মরদেহ ঘরের মধ্যে রেখে বাইরে থেকে জিআই তার দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন আনোয়ার।
এ ঘটনার নেপথ্যের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আনোয়ার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি সিআইডিকে জানিয়েছেন, প্রায় পাঁচ বছর আগে নারায়ণগঞ্জে অবস্থানকালে স্বপ্নার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক।
মুক্তা ধর বলেন, প্রায় ২০-২৫ দিন ধরে স্বপ্নার বড় ভাই জহুরুল চৌধুরীর বাড়িতে দালান নির্মাণের কাজ করে আসছিলেন আনোয়ার। এসময় ১ জানুয়ারি রাতে আনোয়ারকে ডেকে স্বপ্না বলেন, তার ও তার মায়ের মাথাব্যথা করছে, তিনি যেন কাজ শেষ করে তাদের জন্য ওষুধ নিয়ে আসেন।
কাজ শেষে সন্ধ্যার পর আনোয়ার স্বপ্নাদের বাড়ি গিয়ে গল্প করতে থাকেন। একপর্যায়ে আনোয়ারের কাছে মাথাব্যথার ওষুধ চান তারা। এসময় আনোয়ার তার সঙ্গে নিয়ে আসা ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন তাদের। কিছুক্ষণের মধ্যে একই কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন মা-মেয়ে। তখন আনোয়ার তার অবৈধ ইচ্ছা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে অচেতন স্বপ্নাকে পাশের কক্ষে নিয়ে যেতে চান। একপর্যায়ে জেগে ওঠেন স্বপ্না। এসময় আনোয়ার জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করলে স্বপ্না তাতে বাধা দেন।
সিআইডির কর্মকর্তা আরও বলেন, ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ঘরে থাকা বঁটি দিয়ে স্বপ্নাকে হত্যা করেন আনোয়ার হোসেন। এসময় মা জয়ফুল বেগম জেগে গেলে তাকেও কুপিয়ে হত্যা করেন।