নারায়ণগঞ্জের তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলার তদন্ত কার্যক্রম শিগগির শেষ হবে - র্যাব
এক যুগ আগে নারায়ণগঞ্জের তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলার তদন্ত কার্যক্রম শিগগির শেষ করতে পারবে বলে জানিয়েছে র্যাব। শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
তদন্তে অনেক অগ্রগতি জানিয়ে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এখনো তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান এবং আমাদের অনেক ডেভেলপমেন্টও আছে। আমরা শিগগির এটা দিয়ে দেব বলে আশা করছি।
নরসিংদীর চরাঞ্চল থেকে ১১টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটজনকে গ্রেফতারের তথ্য দিতে তিনি এ সংবাদ সম্মেলনে আসেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাসের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলায় ছয়জনের গ্রেফতার ন্যায়বিচারের জন্য আশা জাগিয়েছিল নিহতের পরিবারে।
তবে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পেরিয়ে গেলেও আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা র্যাব।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিলে আরও সময় চেয়ে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আবেদন করে র্যাব। এর প্রেক্ষিতে আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক রঞ্জন মজুমদারকে দ্রুত অভিযোগপত্র দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ অবস্থায় মামলাটির অগ্রগতি জানতে চাইলে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অবশ্যই তদন্ত শেষে বিস্তারিতভাবে জানানো হবে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিবারের সঙ্গে আমাদেরও যোগাযোগ হচ্ছে। তদন্ত দীর্ঘদিনের একটা.এখন হুট করে চাইলেই.তদন্তটা তদন্তের মতো যেন সুন্দরভাবে শেষ হয় এবং এটার যেন একটা ভালো রেজাল্ট আসে আমরা সেটাই সবাই কামনা করি। শিগগির ইনশাআল্লাহ.।
নারায়ণঞ্জের সাংস্কৃতিক ও নাগরিক আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক শিল্পী রফিউর রাব্বির বড় ছেলে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী।

২০১৩ সালের ৬ মার্চ এই কিশোর শহরের শায়েস্তা খাঁ সড়কের বাসা থেকে বেরিয়ে স্থানীয় একটি পাঠাগারে যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হয়।
পরদিন তার এ লেভেল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়, যেখানে দেখা যায় ত্বকী সারা বিশ্বে পদার্থবিজ্ঞানে ৩০০ নম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৯৭ পেয়েছিলেন।
৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়।
তবে দীর্ঘ ১২ বছরেও এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি, তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্রও দাখিল করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা র্যাব।
ত্বকীর পরিবার বরাবরই অভিযোগ করে আসছিলেন, প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের সদস্যরা জড়িত থাকায় আওয়ামী লীগের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ বন্ধ রয়েছে।
তবে ৫ অাগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আলোচিত এই হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছয় জনকে গ্রেফতার করে র্যাব।