ঢাকা প্রতিনিধি।।
মামলার আসামিরা হলেন নিহত লামিয়ার স্বামী ইয়াসিন (২৪), তার শ্বশুর মো. দুলাল (৫০) এবং তার ননদ মোছা. শিমু (২৭)। তারা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ২ নম্বর ওয়ার্ডের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
এদিকে এ মামলায় গ্রেফতার ইয়াসিনের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবার (১২ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেলায়েত হোসেন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এরআগে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় নিহত লামিয়ার বোন মুনমুন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ইয়াসিনের সঙ্গে পাঁচ বছর আগে লামিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই লামিয়ার শ্বশুর ও ননদ প্রায় সময় তাকে মারধর করতেন। তাদের আব্দুল্লাহ নামের চার বছর বয়সী এক সন্তান ছিল। ইয়াসিন মাদকাসক্ত। বিয়ের পর থেকে স্ত্রী-সন্তানের কোনো ভরণপোষণ দিতেন না। বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়া ও মারামারি হতো। এ কারণে লামিয়া তার ছেলে আব্দুল্লাহ (৪) ও বড় বোন স্বপ্নাকে (৩৫) নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড় এলাকায় মোক্তার হোসেনের বাড়িতে আলাদা ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, নিহত লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকার মুজিব ফ্যাশন নামের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ইয়াসিন প্রায় সময় লামিয়ার ভাড়া বাড়িতে গিয়ে টাকা দাবি করতেন। টাকা না দিলে শারীরিক নির্যাতনসহ খুন করার হুমকি দিতেন ইয়াসিন।
সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে মুনমুন ও তার স্বামী লামিয়াদের ভাড়াটিয়া বাসায় যান। তাদের বাসা থেকে আসার পর থেকে লামিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তাদের খোঁজ নেওয়ার জন্য সেই বাড়িতে গিয়েও পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি তাদের। পরে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে লামিয়াদের ভাড়া বাড়ির সামনে রাস্তার পাশ থেকে অর্ধগলিত মরদেহ তিনটি উদ্ধার করা হয়।
আসামি হত্যার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তবে, অন্য দুই আসামি এই হত্যার সঙ্গে জড়িত না বলে ইয়াসিন আমাদেরকে বলে আসছেন। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত সামাদের মেয়ে দুই মেয়ে স্বপ্না আক্তার (৩৫) ও তার ছোট বোন লামিয়া আক্তার (২২) এবং লামিয়ার ছেলে হাবিবের (৩) খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় নিহতদের বাসা থেকে লামিয়ার স্বামী ইয়াসিনকে আটক করা হয়। পরে এ ঘটনায় করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।