িনজস্ব প্রতিনিধি- তিন বছরের শিশু রূপকথা। রাত দিন হই হুল্লোড়ে হাসি খুশিতে মেতে থাকতো। পুরো পরিবার ও স্বজনদের আনন্দে মাতিয়ে রাখতো। সেই রূপকথা নিরব নিস্তব্দ হয়ে এখন হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। তার ছোট্ট শরীর জুড়ে রয়েছে নানা চিকিৎসার যন্ত্রপাতি। মারণব্যাধি রোগ নিউরো ব্লাস্টোমা ক্যান্সারে আক্রান্ত। এই বয়সেই তাকে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম চালাতে হচ্ছে। নিয়মিত দিতে হচ্ছে কেমোথেরাপি। রূপকথা সুস্থ হয়ে বাঁচতে চায়। অন্য শিশুদের মতো সেও মা-বাবার আদর পেয়ে বড় হয়ে পৃথিবী দেখতে চায়। কিন্তু দারিদ্রতা তার সকল চলার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থের অভাবে তার কেমোথেরাপি বন্ধের পথে। রূপকথা নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার রূপালী এলাকার লিটন কুমার ঘোষ ও পদ্ম রানী ঘোষ এর কন্যা। বাবা লিটন কুমার ঘোষ আর্থিকভাবে তেমন স্বচ্ছল নন। তিনি একটি ব্যক্তি মালিকানাধিন প্রতিষ্টানে সামান্য বেতনের চাকুরিজীবি। শিশু রূপকথার মা পদ্ম রানী ঘোষ জানান, পাঁচ মাস আগে হঠাৎ পেটে ও পায়ে ব্যাথা শুরু হয় রূপকথা। এরপর তাকে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। তবু কিছুতেই সুস্থ হচ্ছিল না রূপকথা। শেষমেশ চিকিৎসক পরামর্শ দেন ঢাকায় নেওয়ার। পরামর্শ অনুযায়ী রূপকথাকে গত সেপ্টেম্বরে ধানমন্ডি স্কয়ার হাসপাতালে ডা. আহমেদ সাইদের তত্ত্বাবধানে ভর্তি করানো হয়। পরে তিনি রূপকথাকে একই হাসপাতালের ডা. মাহমুদা জামানের কাছে রেফার্ড করেন। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রূপকথার নিউরো ব্লাস্টোমা ক্যান্সার শনাক্ত হয়। এরপর থেকে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেখানে তার কেমোথেরাপিসহ অন্যান্য চিকিৎসা চলছে। এদিকে সন্তানের সুন্থ্যতার জন্য অক্টোবরে ভারতের টাটা মেমোরিয়াল ও চেন্নাইনের এ্যাপোলা নিয়ে যান বাবা-মা। কিন্তু সেখানে চিকিৎসার ব্যয়ভার করার সামর্থ্য না থাকায় ফিরে আসেন। এরপর থেকে আদরের সন্তানকে সুস্থ্য করে তুলতে আপ্রান অর্থ যোগানের জন্য লড়াই করছেন। নিজের জমানো সঞ্চয়ের টাকা শখের স্বর্ণালংকার সব শেষ করে প্রায় ১৩ লাখ টাকা রূপকথার চিকিৎসার জন্য খরচ করেছেন। এখন প্রায়ই সর্বশান্ত। রূপকথাকে সুস্থ্য করে তুলতে অনেক টাকার প্রয়োজন। অসহায় বাবা লিটন কুমার ঘোষ বলেন, কোথায় থেকে চিকিৎসার টাকা জোগাড় করব, তাই ভেবে উঠতে পারছি না। আমরা গরিব-অসহায়, তাই হয়তো এতো টাকা জোগাড়ও করতে পারব না। তবে আমারা আমাদের এই ফুটফুটে ছোট্ট মেয়েটাকেও হারাতে চাই না। বর্তমানে রূপকথার চিকিৎসার জন্য হতভাগ্য অসহায় বাবা-মা সমাজের বিত্তবান ও দানশীল ব্যক্তিদের নিকট সহযোগিতা চাইছেন।