প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৪, ২০২৪, ৬:৩২ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ৬, ২০২২, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ
নারায়ণগঞ্জের ত্রাস’ জাকির খান এমন কি করেছেন দল বা সমাজের জন্য ?যাকে ছাড়া রাজপথে নামতে অনেকটা ইতস্ত ছিলেন বিএনপির একটি গ্রুপ
বিশেষ সংবাদদাতা // নারায়ণগঞ্জের ত্রাস’ জাকির খান এমন কি করেছেন দল বা সমাজের জন্য। যাকে ছাড়া রাজপথে নামতে অনেকটা ইতস্ত ছিলেন বিএনপির একটি গ্রুপ।
সমাজের সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্থান পতিতা পল্লীর নায়ক দৌলত খানের ছেলে জাকির খান। যে পাপ কেন্দ্র উচ্ছেদ করেন শামীম ওসমান এমপি। পতিতা পল্লীর সরদারের ছেলে, নিজেও এ পল্লী নিয়ন্ত্রণ করে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করেন।
সন্ত্রাসী, নিষিদ্ধ পল্লীর হোতাসহ নানা অপকর্মের জন্য জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমান। সন্ত্রাসী জাকির খানকে বহিষ্কার করার পরই বিএনপির রাজনীতিতে আসে সাবেক সাংসদ আবুল কালামের হাত ধরে। এড. আবুল কালাম যদিও ক্লিনম্যান খ্যাত, তারপরও জাকির খানকে কেন তার দলে আনেন সে বিষয়ে কেউ পরিস্কার উত্তর দিতে না পারলেও প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমান ঠিক তা বুঝতে পেরেছিলেন। ক্লিনম্যান কেন সন্ত্রাসীকে নিলেন তা এখনও অস্পষ্ট। সেই জাকির খানের মত সন্ত্রাসীর মুক্তির দাবীতে সভা করেন বিদ্রোহীরা। ক্লিনম্যান সন্ত্রাসীকে স্থান দিয়েছিল কেন তা ৪ নভেম্বর সভার মাধ্যমে পরিস্কার করে দিয়েছেন বলে অনেকে জানান। সন্ত্রাসী নির্ভর দল বিএনপি তা প্রমান করার সভা ছিল। জাকির খানের মত সন্ত্রাসীদের ছাড়া তাদের অবস্থান জিরো।
উল্লেখ যে, র্যাব-১১-এর অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, জাকির খানের নামে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে পলাতক ছিলেন। সম্প্রতি দেশে ফিরে আত্মগোপন করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
নারায়ণগঞ্জের ত্রাস হিসেবে পরিচিত জাকির খানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
দেশে ফেরার কয়েক দিনের মধ্যে শনিবার ভোরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাব-১১-এর অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা।
তিনি জানান, জাকিরের নামে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে পলাতক ছিলেন। সম্প্রতি দেশে ফিরে আত্মগোপন করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
কোন এলাকা থেকে জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা সংবাদ সম্মেলনে জানানো হবে বলে জানান তানভীর।
জাকির খান ইন্টারপোলের রেড নোটিশপ্রাপ্ত বলে কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তবে ইন্টারপোলের সাইটে রেড নোটিশের তালিকায় যে ৬২ জন বাংলাদেশি আছেন, তাদের মধ্যে নেই জাকির।
এ বিষয়ে র্যাব কর্মকর্তা তানভীর জানান, তারাও সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে জাকির খান ইন্টারপোলের রেড নোটিশে আছেন বলে শুনেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাবে।
পুলিশ ও বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর জাকির খানের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে প্রভাবশালী নাসিম ওসমানের বিরোধ বাধে। পরে জাকির খান বিএনপি নেতা কামালউদ্দিন মৃধার নেতৃত্বে ১৯৯৪ সালে বিএনপিতে যোগ দেন।
১৯৯৫ সালে দেওভোগ এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদকে শহরের সোনার বাংলা মার্কেটের পেছনে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে শহরে পরিচিত পান জাকির।
১৯৯৬ সালে বিএনপি সরকারের শেষ দিকে শহরের খাজা সুপার মার্কেটে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় হওয়া মামলায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড পেয়ে কারাগারে যান জাকির খান, কিন্তু রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় তিনি মুক্ত হন। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মতিন চৌধুরীর নাতি হিসেবে শহরে পরিচিত হয়ে ওঠেন জাকির।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার ৭ মাসের মাথায় কাশীপুর বাংলাবাজার এলাকায় এক ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে করা মামলায় দ্বিতীয় দফায় জাকির খানের ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। আওয়ামী লীগের আমলে প্রায় ৪ বছর কারাগারে ছিলেন জাকির।
১৯৯৯ সালে স্বল্প সময়ের জন্য কারামুক্ত হয়ে জাকির খান জেলা ছাত্রদলের সভাপতির পদ পেয়ে যান। আওয়ামী লীগের শাসনামলের শেষ দিকে ২০০০ সালে শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ থেকে টানবাজার ও নিমতলী যৌনপল্লি উচ্ছেদ করলে জাকিরের পরিবারের আর্থিক মেরুদণ্ড ভেঙে যায়।
২০০১ সালে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিশাল গাড়িবহর নিয়ে অস্ত্রের মহড়া করে আবার কারাবন্দি হন জাকির। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরও প্রায় ৫ মাস তিনি কারাবন্দি ছিলেন।
২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকারের ছোট ভাই তৎকালীন বিএকেএমইএর সহসভাপতি সাব্বির আলম খন্দকার খুন হন। ওই মামলার প্রধান আসামি ছিলেন জাকির খান। মামলার পর থেকে বিদেশে পলাতক ছিলেন তিনি।
Copyright © 2024 নগর সংবাদ. All rights reserved.