আন্দোলন করে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন থামাতে পারবে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০১৩-তেও পারেনি, ‘১৮-তেও পারেনি, এবারও পারবে না।
সদ্যসমাপ্ত বেলজিয়াম সফর নিয়ে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন হবে এবং সময়মতোই হবে। কে চোখ রাঙালো আর কে চোখ বাঁকালো, ওটা নিয়ে আমরা পরোয়া করি না।
তিনি বলেন, নির্বাচন এভাবে (আন্দোলন করে) তারা থামাতে পারবে না। ’১৩-তেও পারেনি, ১৮-তেও পারেনি, এবারও পারবে না। ইনশাল্লাহ নির্বাচন যথাসময়ে হবে। তারা তো চাচ্ছে এটাই (নির্বাচন বন্ধ করা), সেটা করতে পারবে না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। জনগণ ওদের সঙ্গে নাই। জনগণকে কষ্ট দিয়ে রাজনীতি হয় না। রাজনীতি তো জনগণের জন্য।
বিএনপি আসলে নির্বাচনই চায় না
বিএনপি একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, এরা (বিএনপি) আসলে নির্বাচনই চায় না।
বিএনপির সঙ্গে সংলাপ হবে না
আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক শেষে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সব পক্ষকে শর্তহীন সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংলাপ নিয়ে আওয়ামী লীগের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, কার সঙ্গে সংলাপ, খুনিদের সঙ্গে কীসের সংলাপ, কীসের আলোচনা। খুনিদের সঙ্গে সংলাপ, এটা বাংলাদেশের জনগণও চায় না।
শেখ হাসিনা বলেন, সে (পিটার হাস) বসে ডিনার করুক, আলোচনা করুক।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভাই হবে নির্বাচনকালীন সরকার
এবারের নির্বাচন নির্বাচনকালীন সরকার ২০১৮ সালের মতোই হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়া, ইন্ডিয়া, কানাডা বা ইংল্যান্ডে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৮-তে সেভাবেই হয়েছিল। ২০১৪-তে কিছু মন্ত্রী অন্যান্য দল থেকে নিয়োগ করেছিলাম। এরপর ২০১৮ সালে আর সেই পদ্ধতি করি নাই। যেটা অন্যান্য দেশে হয়, এবারও সেভাবেই হবে। সরকার থেমে থাকবে না। সরকারের দৈনন্দিন যে কাজগুলো, রুটিন কাজগুলো করতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার কে হবে না হবে, সেদিকে আমরা যাচ্ছি না। আমরা যেভাবে চলার, অন্যান্য দেশ,,, আমি এটা ইংল্যান্ডেও আলাপ করেছি, তাদের দেখেছি; অস্ট্রেলিয়া, কানাডা যেসব দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র আছে সেভাবেই করা হবে। অর্থাৎ সে সময় আমরা যারা থাকব, ওই আমরাই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে আমাদের রুটিন ওয়ার্ক, দায়িত্বপালন, দৈনন্দিন কাজকর্ম করব। যাতে সরকার অচল হয়ে না যায়, সেটা আমরা করব।
নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভার আকার কেমন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আকার-বিকার সেটা যখন যেরকম হবে দেখা যাবে। আকার ছোট করলে যেটা সমস্যা হয় ২০১৪ সালে দেখেছি অনেক মন্ত্রণালয়ের কাজ আর হয় না। কাজগুলো বাধাগ্রস্ত হয়ে যায়। কাজগুলো যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, আমাদের উন্নয়নের ধারাটা যাতে অব্যহত থাকে। আমাদের সেটাই প্রচেষ্টা।
তিনি বলেন, আমাদের আরপিও অনুযায়ী যখনই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে এবং নমিনেশন সাবমিট হবে তখন থেকে আর সরকারি সুযোগ-সুবিধা মন্ত্রীরা ব্যবহার করতে পারবে না। একজন প্রার্থী হিসেবেই ভোট চাইতে হবে।
বিএনপি আবার প্রমাণ করেছে তারা সন্ত্রাসী দল
২৮ অক্টোবর সহিংসতার মাধ্যমে বিএনপি সন্ত্রাসী সেটা আবার প্রমাণ হয়েছে বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সন্ত্রাসী। বিএনপি সন্ত্রাসী দল, সেটা তারা আবার প্রমাণ করেছে।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টদের কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন। সন্ত্রাসীদের কীভাবে শিক্ষা দিতে হয়, সেভাবে দিতে হবে।
ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েনের আমন্ত্রণে ২৫-২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগ দিতে গত ২৪ অক্টোবর ব্রাসেলসে যান প্রধানমন্ত্রী। সফর শেষে ২৭ অক্টোবর দেশে ফেরেন তিনি।