স্টাফ রিপোর্টার।। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম পবিত্র ঈদুল আজহা। এই উৎসবটি কুরবানির ঈদ নামেও পরিচিত। আগামী শনিবার (৭ জুন) নীলফামারীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। নীলফামারী জেলা সদরে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত কোন কোন এলাকায় কোন স্থানে কখন অনুষ্ঠিত হবে তার তালিকাসহ সময় নির্ধারণ করে তা প্রচার করেছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকলে ঈদুল আজহার জামাত নিজ নিজ এলাকার জামে মসজিদে সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, নীলফামারী জেলা সদরে প্রধান ঈদুল আজহার জামাত শহরের প্রাণকেন্দ্র বড় মাঠের কেন্দ্রীয় ঈদগা ময়দানে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। এই মাঠে নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামানসহ সরকারি কর্মকর্তারা নামাজ আদায় করবেন। সূত্র মতে, সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে নীলফামারী জেলার প্রথম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে মুন্সিপাড়া আহলে হাদীছ ঈদগা মাঠে। এরপর নীলফামারী পুলিশ লাইন্স মাঠে ঈদের জামাত ৭টা ৪৫ মিনিটে। সেখানে ঈদের জামাত আদায় করবেন নীলফামারীর পুলিশ সুপার এ এফ এম তারিক হোসেনসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তারা।
এছাড়া সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে সার্কিট হাউজ-ডাক বাংলো ঈদগাহ মাঠ, বাড়াইপাড়া নতুন জামে মসজিদ ঈদগা মাঠ ও গাছবাড়ি পঞ্চপুকুরপাড়া ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। অপরদিকে কলেজ স্টেশন ঈদগা মাঠ, কুখাপাড়া (ধনীপাড়া) ঈদগা মাঠ ও জোড় দরগাঁ ঈদগা মাঠে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি জেলা কারাগারে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে সাড়ে ৮টায়। নীলফামারী পৌরসভার প্রশাসক সাইদুল ইসলাম জানান, শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগা মাঠের ঈদের জামাতের প্রস্তুতি করে থাকে পৌরসভা। এ জন্য মাঠ প্রস্তুতির কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে মুসল্লিদের সুবিধার্থে পুরো মাঠে স্ট্যান্ড ফ্যান ও সামিয়ানা টাঙ্গানোর হচ্ছে। এ ছাড়া গ্রীষ্ম মৌসুমে আচমকা বৃষ্টি ও ঝড়ের কথা চিন্তা করে মাঠে সামিয়ানার উপরে ত্রিপল/পলিথিন টাঙ্গানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, প্রতিকূল বা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করলে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানের নামাজ জেলা শহরের কেন্দ্রীয় বড় মসজিদে সকাল সারে সারে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য ঈদগাহ মাঠের জামাত সংশ্লিষ্ট এলাকার মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।
মসজিদগুলোতে একাধিক জামাত হলে সংশ্লিষ্ট ঈদগাহ কমিটি সময় নির্ধারণ করবেন। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরে নীলফামারী শহরের কেন্দ্রয় ঈদগা মাঠে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠ সুসজ্জিত করতে ডেকোরেশনের কর্মীরা কাজ করছেন। কর্মীরা জানান, এখানে একসঙ্গে প্রায় ২৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন সেভাবেই কাজ করা হচ্ছে। অপরদিকে জানা যায়, জেলার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সৈয়দপুর উপজেলারগুলোর ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা কেন্দ্রীয় ঈদমাঠ ও মডেল মসজিদে। যা একই সময় সকাল সারে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। জেলার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সূত্রমতে, জেলা ৬০টি ইউনিয়ন ও ৪ পৌরসভায় প্রায় ১৫০টি ঈদগাহ ময়দান রয়েছে। সেখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
নীলফামারী জেলা ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মো. মোছাদ্দিকুল আলম জানান, জেলায় মোট ৫ হাজার ৫০০টি মসজিদ রয়েছে। ঈদের জামাত সাধারণত ঈদগাহ ময়দানে হয়। তবে এ জন্য আমাদের থেকে কোনও নির্দেশনা বা বাধ্যবাধকতা নেই। তবে ঈদগা ময়দানে জায়গা না হলে একাধিক জামাত অথবা স্ব-স্ব এলাকার সংশ্লিষ্ট মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও জানান, জেলায় বর্তমান প্রতিকূল আবহাওয়া বিরাজ করছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট ঈদগাহ কমিটিদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে সঠিকভাবে মুসল্লিরা কোরবানির পশু জবাই করতে পারে এজন্য মসজিদে-মসজিদে মাইকিং এর মাধ্যমে নির্দেশনার জন্যও বলা হয়েছে। যেন তারা ত্রিপল বা টিন শেড দিয়ে কুরবানির পশু জবাই করতে পারে।