কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সহধর্মিণী মেহের আফরোজ শাওনের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ৩২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
গ্রেফতারকৃতের নাম মো. রবিউল ইসলাম (৪১)।
এ সংক্রান্ত মামলার তদন্ত করছিল ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল হক।
তিনি জানান, সম্প্রতি প্রতারকের খপ্পরে পড়ে প্রায় ৩২ হাজার টাকা খোয়ান কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সহধর্মিণী মেহের আফরোজ শাওন। তার মোবাইলে ফোন করে নিজেকে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া পরিচয় দিয়ে রবিউল ইসলাম জানান, নুহাশপল্লীর উন্নয়ন বাবদ অস্ট্রেলিয়া থেকে বড় অংকের একটি ফান্ড এসেছে। এ ফান্ড বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা আছে।
এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক উপ-সচিবের মোবাইল নম্বর দিয়ে শাওনকে যোগাযোগ করতে বলেন ওই প্রতারক। শাওন ওই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে অন্য প্রান্ত থেকে নিজেকে উপ-সচিব পরিচয় দেন প্রতারক রবিউল। এ সময় তাকে জানানো হয়, ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য সরকারি ফি বাবদ ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা দিতে হবে।
শাওনও বিশ্বাস করে টাকা দেন। এরপর যোগাযোগ করে নম্বরটি বন্ধ পান। পরে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে নুহাশ পল্লীর ম্যানেজার বাদি এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল হক জানান, ২০১৯ সাল থেকে প্রতারক রবিউল ইসলাম বিভিন্ন কৌশলে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নম্বর সংগ্রহ করেন। পরে ওই নম্বরগুলোয় কল করে প্রতারণা করতেন তিনি। কখনও নিজেকে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া; কখনও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও অন্যান্য সংসদ সদস্যদের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে বিদেশি অনুদানের কথা বলে অর্থ আদায় করতেন।
রবিউল অনুদানের অর্থ প্রাপ্তির জন্য ভুক্তভোগীদের সরকারি ভ্যাট ট্যাক্স ও প্রসেসিং ফি বাবদ নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দেওয়ার কথা বলতেন। ফি’র টাকা মোবাইল ব্যাংকিং নগদ/বিকাশের মাধ্যমে নিয়ে পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতেন।
প্রতারক রবিউলের নামে আরও বেশ কয়েকটি মামলা চলমান। এ পর্যন্ত তিনটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। আরও মামলা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আসামির সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কি না তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলেও জানান ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের প্রধান।