নোয়াখালী প্রতিনিধি :
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে আব্দুল খালেক খাজা মিয়া (৭০) নামের এক বৃদ্ধের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে চরজব্বার থানা পুলিশ। তবে পুলিশ ও নিহতের স্বজনেরা তাৎক্ষণিক হত্যাকান্ডের কোনো কারণ জানাতে পারেনি।
রোববার (৭ জুলাই) সকালে খবর পেয়ে উপজেলার চরজব্বর ইউনিয়নের চর রশিদ গ্রাম থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত আব্দুল খালেক ওরফে খাজা মিয়া সুবর্ণচর উপজেলার চর জব্বর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের চর রশিদ গ্রামের মৃত আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি বাড়িতে কৃষিকাজ দেখাশুনা করতেন।
নিহতের ষাটোর্ধ স্ত্রী কমলা বেগম কাঞ্চন বলেন, আমার স্বামী সন্ধ্যার সময় স্থানীয় কাঞ্চন বাজারে গিয়ে ছিলেন। আর ফিরেন নি। খবর নিয়ে জানলাম তিনি রাত ৯ টার দিকের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন। রাতে বাড়ি না ফেরায় আমরা খুব চিন্তিত ছিলাম। ভেবেছিলাম কাঞ্চন বাজারের পাশে মেয়ের জামাই বাড়ি হয়তো শরীর খারাপ হওয়ায় সে বাড়িতে যেতে পারে। পরে ভোরে ফজরের নামাজ পড়ে বাড়ির সামনে গিয়ে দেখেন স্বামীর গলাকাটা মরদেহ পড়ে আছে।
নিহতের ছেলে গ্রাম পুলিশ খলিলুর রহমান বলেন, আমার বাবাকে কে বা কারা বাড়ির সামনে নৃশংস ভাবে জবাই করে হত্যা করেছে। আমি দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। এভাবে যেনো কারো বাবা হারাতে না হয় আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
নিহতের মেজো ছেলে মো.ছিদ্দিক উল্যাহ বলেন, তিনি পরিবার নিয়ে ফনী জেলায় থাকেন। বাবার মৃত্যুর সংবাদ শুনে তিনি বাড়িতে এসেছেন। বাবা খুবই সহজ সরল লোক ছিলেন। তার সাথে কারো বিরোধ ছিলনা। কে বা কাহারা তাকে নৃসংশ ভাবে হত্যা করেছে। এখন পর্যন্ত হত্যার কোনো কারণ তাদের জানা নেই।
চরজব্বার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট ওমর ফারুক বলেন , বৃদ্ধ খাজা মিয়া এক সময়ে স্থানীয় বাজারের চা দোকানদার ছিল। স্ত্রী কমলা বেগম কাঞ্চনসহ নিজ বাড়িতে একা বসবাস করেন। বড় ছেলে ইউপি গ্রামপুলিশ সেই পরিবার নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের পাশেই থাকে। অন্য ছেলেরাও পরিবার নিয়ে বাইরে থাকেন। গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে তিনি স্থানীয় কাঞ্চন বাজার থেকে প্রতিবেশী আরেক লোকের সাথে বাড়ি ফিরেন। কিন্তু বাজার থেকে তিনি আর ঘরে আসেননি। রোববার ভোরে তার স্ত্রী ফজর নামাজ পড়তে উঠে স্বামীকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুজি শুরু করেন। একপর্যায়ে সকাল ৬টার দিকে নিজ বাড়ির সামনে স্বামী খাজা মিয়ার গলা কাটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে থানা পুলিশে খবর দেয় ।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাওসার আলম ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমি নিজেই পুলিশের একাধিক দল নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই।
পরে ঘটনাস্থল থেকে নিহত বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনসহ জড়িতদের আটক করার চেষ্টা চলছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত করে এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।