শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে নেন বাসা ভাড়া। এরপর শুরু করেন মাদকের পাইকারি ও খুচরা বিক্রি। তবে সব থেকে চাঞ্চল্যকর বিষয়টি হচ্ছে সহজে মাদক সরবরাহ ও বিক্রির জন্য আশ্রয় নেন পুলিশ পরিচয়ের। রাজধানীর ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা এলাকা থেকে দুজন মাদক কারবারিকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য জানিয়েছে র্যাব-১। গ্রেফাররা হলেন- নাফিস মোহাম্মদ আলম (২১) ও তার বান্ধবী মোছা. রাত্রি খান (২৩)।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে র্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১ জানতে পারে, রাজধানীর ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ মাদক কারবারিরা অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১ এর একটি দল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ১০ নম্বর রোডের ৩১০ নম্বর বাসায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে।
এসময় তাদের কাছ থেকে ৩৬১ বোতল বিদেশি মদ, ২৯৯ ক্যান বিয়ার, ৫০ গ্রাম গাঁজা, ০.৩৪ গ্রাম আইস, তিন পিস প্যাথেড্রিন ইনজেকশন, ৮টি মাদক সেবনের উপকরণ, মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত পুলিশ লেখা স্টিকার ও বিকন লাইটসহ একটি প্রাইভেটকার, চারটি ওয়াকিটাকি সেট, দুটি ওয়াকিটাকি চার্জার, একটি সিগন্যাল লাইট, পুলিশ মনোগ্রাম সংযুক্ত একটি ব্যারেট ক্যাপ, দুটি পুলিশের কটি, পুলিশের চারটি মনোগ্রাম সম্বলিত কোটপিন, দুটি প্লাস্টিকের খেলনা পিস্তল, দুটি হোলস্টার, ৫টি খালি কার্তুজ, চারটি ভিসা কার্ড, একটি পাসপোর্ট, দুটি স্পাই ক্যামেরা, একটি হার্ডডিস্ক, একটি ল্যাপটপ, ক্যাসিনো খেলার বিভিন্ন উপকরণ, চারটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৪ লাখ ৭৯ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, গ্রেফতার নাফিস মোহাম্মদ আলম জানান তিনি একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনার্স তৃতীয়বর্ষের ছাত্র। শিক্ষার্থী পরিচয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন। পরে এই বাসা থেকে মাদক কারবারি শুরু করেন। তিনি মূলত বিদেশি মদের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী। রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, মোহাম্মদপুর, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাইকারি ও খুচরা মাদক সরবরাহ করতেন।
এ র্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, অভিযুক্ত নাফিস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে Syndicate International নামে একটি গ্রুপ পরিচালনা করতেন এবং এই গ্রুপের মাধ্যমে মাদক কারবারি নিয়ন্ত্রণ করতেন। নাফিস সহজেই মাদক পরিবহন, সরবরাহ ও বিক্রির উদ্দেশ্যে নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন। তিনি মেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তার শয়নকক্ষে থাকা গোপন ক্যামেরায় ধারণ করতেন। এসব অশ্লীল অনেক ছবি, ভিডিও ও তথ্য তার মোবাইল ফোন ও হার্ডডিস্ক থেকে পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, এছাড়া কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হিসেবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে নাফিজ ওরফে নাফিজ ডন নামে তার বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা রয়েছে। অন্য আসামি মোছা. রাত্রি খান নাফিজের মাদক কারবারি সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।