সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে পুলিশ সদস্যকে কৌশলে ডেকে নিয়ে মারধর করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে দুই তরুণী ও বিএম কলেজের এক ছাত্রসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনকে আসামি করা হয়।
জেলহাজতে পাঠানো আসামিরা হলেন—বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ছাত্র সুমন ডাকুয়া (২৬), তার সহযোগী বরিশাল নগরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী জালাল আহম্মেদ লেনের বানাত মঞ্জিলের বাসিন্দা পারভেজ হাওলাদার (২২) এবং ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর থানাধীন দক্ষিণ সাতপুর এলাকার বাসিন্দা তানিয়া আক্তার (২১) ও তার বড় বোন রিমা আক্তার (২৫)। তাদের আটক করে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে পুলিশ সদস্যকে আটকে রেখে মারধর ও চাঁদা আদায়ের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেফতার চারজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতারদের রিমান্ড আবেদন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী মো. আনিসুর রহমান পটুয়াখালীর দুমিকি উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজাখালী এলাকার বাসিন্দা ও ভোলা জেলা পুলিশের কনস্টেবল পদে কর্মরর্ত রয়েছেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ দিনের ছুটিতে তিনি বাড়িতে আসেন। ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচিত হওয়া তানিয়া আক্তার নামে এক তরুণী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাদীকে বরিশাল নগরের বিএম কলেজের মসজিদ গেটের সামনে যেতে বলেন। মামলার বাদী সেখানে গেলে তানিয়া ও তার বোন রিমা আক্তার মসজিদ গেটের বিপরীত পাশের জালালাবাদ লেনের একটি বিল্ডিংয়ের নিচ তলার ফ্ল্যাটে নিয়ে যান।
সেখানে মামলার বাকি আসামিরা আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন। আসামিরা বাদীকে আটকে রেখে মারধর করেন এবং ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। তারা বাদীর মানিব্যাগ থেকে তিন হাজার টাকা এবং এটিএম কার্ড থেকে দুই হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যান। পরে আরও টাকা দাবি করলে বাদী তার ভাই হামিদুর রহমান সুজনকে ৫ হাজার টাকা দিতে বলেন। এ সময় আসামিরা বাদীর ভাইকে একটি দোকানের বিকাশ নম্বর দেন।
বিষয়টি নিয়ে বাদীর ভাইয়ের সন্দেহ হলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে আসামিদের দেওয়া বিকাশ নম্বরের কথা বলে বিএম কলেজের আরফা স্টোরের সামনে এসে অবস্থান নেন। এ সময় সুমনের সহযোগী ও মামলার দুই নম্বর আসামি পারভেজ বিকাশে পাঠানো টাকা তুলতে গেলে বাদীর ভাই ও ফুপা তাকে আটক করে থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ এসে পারভেজের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঘটনাস্থলে গিয়ে সুমন ডাকুয়াসহ বাকি তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হয় এবং পুলিশ সদস্য ও মামলার বাদী আনিসুর রহমানকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন আসামি পালিয়ে যেতে সক্ষম হন বলে বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন।