রবিবার ১৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত ১:১২
শিরোনামঃ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জান্নাতুল মাওয়া পাকিস্তানের  সম্মাননা পেলেন  নোয়াখালীতে ক্রেতা সেজে ফেনসিডিল কারবারি গ্রেপ্তার বায়ুদূষণের শীর্ষে আজ পাকিস্তানের লাহোর,২য় দিল্লি,৩য় কলকাতা,৪ র্থ তাসখন্দ,৫ম ঢাকা। দীপাবলী উপলক্ষে কলকাতার শহীদ মিনারের সামনে শুরু হল গ্রীন বাজী বাজার ২০২৫। জুলাই সনদ’ স্বাক্ষর হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ -আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লায় পরিত্যক্ত দোকানে যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লায় অস্ত্রসহ কিশোর গংয়ের ৪ জন গ্রেফতার। চৌহালীতে যমুনায় অভিযান চালিয়ে দুই  লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ : ১১ জেলে আটক সুবর্ণচরে এই প্রথম বিক্রয় প্রতিনিধি জোটের উপজেলা কমিটি গঠন ও আলোচনা সভা খাষপুখুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ অবকাঠামো সংকট: চৌহালীতে কার্যালয় ছাড়াই চলছে পরিষদের  কার্যক্রম

প্রাচীন বাংলার রাজধানীগুলোর অন্যতাম সোনারগাঁ-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক সংগ্রহশালা

nagarsangbad24
  • প্রকাশিত: আগস্ট, ২৮, ২০২৫, ১২:১৩ অপরাহ্ণ
  • ১০২ ০৯ বার দেখা হয়েছে

প্রাচীন বাংলার রাজধানীগুলোর অন্যতাম সোনারগাঁ-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক সংগ্রহশালা

নারায়নগন্জ প্রতিনিধি(সোনারগাঁ)

প্রাচীন বাংলার রাজধানীগুলোর অন্যতাম সোনারগাঁ। এখানেই রয়েছে বাংলার হাজার বছরের লালিত ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের এক অনন্য সংগ্রহশালা। যার নাম বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানে রয়েছে ইতিহাস-ঐতিহ্যসমৃদ্ধ অনকে স্থাপনা, যা দেশ-বিদেশের পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়ে। সবুজে আচ্ছাদিত সংগ্রহশালাটি এখন বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটননগরী।

দেশের অবহেলিত কারুশিল্পীদের পুনর্বাসন এবং তাদের হাতে তৈরি জিনিসপত্র রক্ষণাবেক্ষণে প্রথমেই এগিয়ে আসেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন। তিনিই দেশের ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল জনপদ বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁয়ে আবহমান গ্রামবাংলার লোকজ সংস্কৃতিকে পুনরুজ্জীবন, সংরক্ষণ ও বিপণনে ১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ গড়ে তোলেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। স্থানীয় পানাম নগরীর পুরোনো একটি বাড়িতে প্রথমে ফাউন্ডেশনের কাজ শুরু হয়। পরে ১৯৮১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর শত বছরের পুরোনো ইছাপাড়ায় গোপীনাথ সর্দারবাড়িতে ফাউন্ডেশনটি স্থানান্তরিত হয়। ১৯৯৮ সালের ৬ মে এটি সরকারি গেজেটভুক্ত হয়।

সর্দারবাড়িটি প্রাচীন এক অট্টালিকা। এটি পুরোনো লোকশিল্প জাদুঘর। ইতোমধ্যে বাড়িটির সংস্কারকাজ সম্পন্ন করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়াংওয়ান করপোরেশন। এই বাড়ির পূর্বদিকে রয়েছে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের প্রশাসনিক ভবন, গ্যালারি ভবন, গ্রন্থাগার, কারুশিল্প গ্রাম, কারুপল্লি। হাতের তৈরি জিনিস প্রদর্শনী ও বিক্রির মাধ্যমে এ শিল্প প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ফাউন্ডেশন।

১৭০ বিঘা আয়তনের ফাউন্ডেশন এলাকায় দর্শনার্থীদের জন্য ১১টি গ্যালারি রয়েছে। এগুলোয় রয়েছে নিপুণ কাঠ খোদাই, গ্রামীণ জীবন, পটচিত্র, মুখোশচিত্র, নৌকার মডেল, উপজাতি, লোকজ বাদ্যযন্ত্র ও পোড়ামাটির নির্দশন; তামা, কাঁসা, পিতলের তৈজসপত্র; লোকজ অলংকার এবং বাঁশ, বেত, শীতলপাটিসহ নানা ধরনের পণ্যের প্রদর্শনী।

এছাড়া কারুশিল্প ফাউন্ডেশন কম্পাউন্ডের ভেতরে রয়েছে জয়নুলের সংগ্রাম গরুর গাড়ির ভাস্কর্য, লাইব্রেরি ও ডকুমেন্টেশন সেন্টার, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আবক্ষ ভাস্কর্য, জয়নুল জাদুঘর, ক্যান্টিন, লোকজ রেস্তোরাঁ, সেমিনার হল, ডাকবাংলো, কারুপল্লি, কারুমঞ্চ, মৃৎশিল্পের বিক্রয়কেন্দ্র, গ্রামীণ উদ্যান, আঁকাবাঁকা দৃষ্টিনন্দন লেক ও বনজ, ফলদ, ঔষধিসহ শোভাবর্ধন প্রজাতির বাহারি বৃক্ষরাজি।

জয়নুল জাদুঘরের দুটি গ্যালারির একটি কাঠের তৈরি প্রাচীন ও আধুনিককালের নিদর্শন দিয়ে সজ্জিত। এখানে রয়েছে নকশি কাজ করা কাঠের বেড়া, রথের জোড়া ঘোড়া, বিয়ের নকশি পিঁড়ি, কাঠের চামচ, কাঠের চিত্রিত ঘোড়া, হাতি, পুতুল, রথের পৌরাণিক প্যানেল এবং আধুনিক ও বর্তমান ধারার কাঠের কারুশিল্প। অপর গ্যালারিতে রয়েছে সোনারগাঁয়ের বিখ্যাত নকশি করা জামদানি শাড়ি।

ফাউন্ডেশনের পশ্চিম প্রান্তে বিশাল এলাকাজুড়ে তৈরি করা হয়েছে কারুশিল্প গ্রাম। এখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অজানা-অচেনা অথচ দক্ষ কারুশিল্পীরা বাঁশ, বেত, কাঠ, মাটি, জামদানি, নকশিকাঁথা, পাট, ঝিনুক, কামার, শঙ্খ, রেশম দিয়ে পণ্য উৎপাদন, প্রদর্শন ও বিক্রি করেন। ফাউন্ডেশনের আঙিনায় প্রতিবছর মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব হয়। এছাড়া বিভিন্ন উৎসবেও মেলা বসে এখানে।

সোনারগাঁয়ে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে বেড়াতে আসা পর্যটক হোসেন জানান, গ্রামবাংলার কারুশিল্পীদের হাতের তৈরি জিনিস ও প্রাচীন বাংলার মুদ্রাসহ প্রাচীন ও মধ্যযুগের হারানো সব নিদর্শন স্থান পেয়েছে এখানে। গ্রামীণ নারীদের নকশিকাঁথা বুননের চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে এখানে। এককথায় এখানে চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আবহমান গ্রামবাংলাকে। গ্রামবাংলার মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্মের ছবি নিখুঁতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে; যা দেখে প্রাচীন বাংলার মানুষের গ্রামীণ জীবনব্যবস্থা সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা লাভ করা যায়।

জানতে চাইলে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক একেএম আজাদ সরকার জানান, ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রতিবছর মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব হয়। জানুয়ারির মাঝামাঝি মেলার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও ফাউন্ডেশন বৈশাখী মেলা ও বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করে থাকে। মেলাগুলোয় গ্রামীণ খেলাধুলা, লোকজ গান, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, মুর্শিদি, লালনগীতি, হাসন রাজার গান, লোকনাট্যসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা উপস্থাপন করা হয়।

ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলম জানান, বর্তমানে জাদুঘর ভবনে এক হাজারের বেশি কারুশিল্পের নিদর্শন প্রদর্শিত হচ্ছে। আরও তিন হাজারেরও বেশি কারুশিল্প নিদর্শন ফাউন্ডেশনের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। এসব সামগ্রী প্রদর্শনীর জন্য জাদুঘর ভবন সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন ভৌত সুবিধাদি বৃদ্ধির একটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। বর্তমানে প্রতিবছর প্রায় সাত লাখ দর্শনার্থী এ জাদুঘর ও ফাউন্ডেশন চত্বর পরিদর্শন করেন।

এ বিভাগের আরও খবর...

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০৩১  

Archive Calendar

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০৩১  
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | নগর সংবাদ
Design & Developed BY:
ThemesCell