বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে স্কুলের সামনে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচীতে অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ, জনপ্রতিনিধি ও কয়েকজন প্রাক্তন শিক্ষক।
মানববন্ধনে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানান, নারায়ণগঞ্জের ইতিহাস, ঐতিহ্যসহ প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নানা আবেগ ও স্মৃতি জড়িয়ে আছে জেলার প্রাচীনতম এই স্কুল জুড়ে। স্কুলটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তৎকালীন চিকিৎসক ডা. ক্যাপ্টেন ডাব্লিউ এফ রহমান, সাবেক মহকুমা প্রশাসক ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের নানা অবদান রয়েছে।
এছাড়া স্কুলটির শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনায় বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন প্রয়াত প্রধান শিক্ষক আয়েশা জালাল। প্রাচীন ভবনটিও এর ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহন করছে। এছাড়া প্রাক্তন অনেক শিক্ষার্থী এখনও দেশের সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন পেশায় উচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ধরে রেখেছেন। মানবন্ধনে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন থাকলেও তাদের সাথে কোন আলোচনা না করে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বর্তমান জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ সম্প্রতি ”কালেক্টরেট” শব্দ যুক্ত করে স্কুলটির নাম পাল্টে দিয়েছেন। শহরে সরকারিভাবে পরিচালিত একটি নির্ধারিত কালেক্টরেট স্কুল থাকা সত্ত্বেও ঐতিহ্যবাহি প্রিপারেটরী স্কুলের নামের সাথে কালেক্টরেট শব্দ যুক্ত করা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না বলে দাবি প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের।
এছাড়া অবকাঠামোগত উননয়নের আওতায় স্কুলের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত নতুন ভবনের নামকরণ সাবেক জেলা প্রশাসকের নামে দেয়ায় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি পুরনো ভবনটিও ভেঙ্গে ফেলার পাঁয়তারা চলছে। জেলা প্রশাসক এককভাবে এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে স্কুলটির প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের আবেগ ও হৃদয়ে আঘাত করেছেন বলে সবাই মনে করছেন। অবিলম্বে নতুন নাম বাদ দিয়ে স্কুলের মূল নাম বহাল রাখাসহ, নতুন ভবনটি প্রয়াত প্রধান শিক্ষক আয়েশা জালালের নামে নামকরণ ও স্মৃতি বিজরিত পুরনো ভবনটি সংরক্ষণের দাবি জানান প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
পাশাপাশি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিশেষ ভূমিকা পালনকারি ডা. ক্যাপ্টেন ডাব্লিউ এফ রহমান, এইচ টি ইমাম ও আয়েশা জালালের প্রতিকৃতি স্থাপনেরও দাবি জানানো হয়।
অবিলম্বে তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে জেলা প্রশাসকের প্রতি আহবান জানান স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। অন্যথায় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলে দাবি আদায় করার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
মেয়র আইভী বলেন, প্রশাসন যদি আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো না মানে তাহলে আমরা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাই যথেষ্ট। আমরা নিজেরাই স্কুলের বর্তমান সাইনবোর্ড খুলে ফেলব এবং স্কুলের মূল নামের সাইনবোর্ড টানিয়ে দেব। তবে আমরা এই কাজটি করতে চাই না। আমাদের যেন বাধ্য করা না হয়। আমরা আশা করি জেলা প্রশাসক আমাদের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় বসে সুষ্ঠু সমাধান দেবেন।