নগর সংবাদ।।ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় চার মামলার এক আসামিকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছিলেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। এ সময় রুখে দাঁড়ায় এলাকার কয়েকজন ১৫-২০ জন নারী।
তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয়েছে দুই পুলিশ সদস্যকে। পরে নারীরা ছিনিয়ে নিয়ে যায় ওই আসামিকে।
জানা যায়, রোববার (১ মে) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া ছয়আনি এলাকায় পুলিশের ওপর হামলার মামলার আসামি তারা মিয়াকে (৫২) গ্রেফতার করেন সালথা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খারদিয়া এলাকার বিট কর্মকর্তা মো. নাজমুল ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. লিয়াকত হোসেন। তাদের গ্রেফতার অভিযানের সময় রুখে দাঁড়ায় ওখানকার কয়েকজন নারী। ১৫-২০ জন নারী চড়াও হয়ে ওই দুই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় ওই আসামিকে। ছিনিয়ে নেওয়া আসামি তারা মিয়া খারদিয়ার ছয়আনি পাড়ার বাসিন্দা মৃত মো. মোফাজ্জেল মিয়ার ছেলে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সালথা সার্কেল) মো. সুমিনুর রহমান বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল ও লিয়াকত আসামি তারা মিয়াকে ধরে ফেরেছিল। কিন্তু ওই সময় ওই এলাকার ১৮-২০ জন নারী এগিয়ে এসে পুলিশের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। নারীরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে জাপটে ধরে আলাদা করে ফেলেন। ওই সুযোগে পালিয়ে যান তারা মিয়া। তিনি বলেন, পুলিশের এ অভিযানে কোনো নারী পুলিশ না থাকায় নারীদের পক্ষে আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়া সহজ হয়েছে।
খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যদুনন্দী ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মিয়ার সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জেরে ওই এলাকায় বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
গত ২১ এপ্রিলের খারদিয়া এলাকায় এই দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ থামাতে আহত হয় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এ ঘটনায় পরে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা হয়। মামলার আসামি হিসেবে ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মিয়া গ্রেফতার হন। গত বৃহস্পতিবার উভয়েই আদালত থেকে জামিন পেয়ে এলাকায় ফিরে আসেন।
তারা মিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সমর্থক। তিনিও পুলিশের ওপর হামলার মামলার আসামি। এছাড়া তার নামে ২০১৯ সালে একটি এবং ২০২০ সালে দুটি মামলা রয়েছে। চার মামলার এ আসামিকে গ্রেফতার করতে গিয়ে নারীদের হামলার শিকার হন ওই দুই পুলিশ সদস্য।